ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

পশ্চিমবঙ্গে ভাঙনের মুখে বামফ্রন্ট

রক্তিম দাশ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৬ ঘণ্টা, জুন ৫, ২০১১

কলকাতা: ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ৩৫ বছর ধরে ঐক্যবদ্ধ থাকা বামফ্রন্ট বিধানসভা নির্বাচনের শোচনীয় পরাজয়কে কেন্দ্র করে ভাঙনের মুখে পড়েছে।

পরাজয়ের দায়ভার সিপিএম’র কাধে চাপিয়ে দিচ্ছে বামফ্রন্টের শরিকরা।

এ নিয়ে মন কষাকষির পাশাপাশি শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্কও। সেইসঙ্গে বামফ্রন্টের দীর্ঘদিনের ঐক্যে ক্রমশ দৃশ্যমান হয়ে উঠছে ফাটল।

নন্দীগ্রাম ও সিঙ্গুর ইস্যুতে বারবার শরিকদলগুলো বিশেষত সিপিআই, আরএসপি ও ফরওর্য়াড ব্লক বামফ্রন্টের রাজ্য কমিটির সভাগুলোতে সিপিএম নেতৃত্বের সঙ্গে ঐকমত্যে কখনই আসতে পারেনি।

সে সময় সংবাদমাধ্যমে এ ব্যাপারে বার বারই মুখ খুলতেন শরিক দলের নেতারা।

আরএসপির রাজ্য নেতা ও সাবেক পূর্তমন্ত্রী ক্ষিতি গোস্বামী সে সময় সংবাদমাধ্যমে সিপিএম’র সরাসরি সমলোচনা করে বলেছিলেন, ‘তাদের অন্ধকারে রেখে সিপিএম এককভাবেই সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রাম প্রশ্নে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। ’

সে সময় ওই তিন শরিক দলের নেতারা সিপিএমকে বাদ দিয়ে নিজেদের মধ্যে একাধিক সভাও করেছেন। বিষয়টিকে সংবাদমাধ্যম ‘মিনি বামফ্রন্ট’ রূপে চিহ্নিতও করেছিল।

রাজনৈতিক মহলের ধারণা, এতদিন বড় শরিক রূপে সিপিএম’র সাহায্য ছাড়া ভোটে জেতা ও মন্ত্রিত্ব রক্ষার প্রশ্নে শরিকদলগুলো মুখ খোলেনি।

তবে এবারের নির্বাচনে পরাজয়ের পর, সিপিএমর শক্তি হ্রাস পাওয়ায় তারা আবার মুখ খুলতে শুরু করছেন।

অন্য শরিকদলগুলোতে বামফ্রন্টে থাকার বিষয়টি নিয়ে আলাপ আলোচনা চললেও সমাজবাদী পার্টি কয়েকদিনের মধ্যেই তাদের অবস্থান পরিষ্কার করতে চলেছে এ বিষয়ে।

বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ে দায়ভার মূলত সিপিএম‘র মনে করছেন সাবেক মৎস্যমন্ত্রী কিরণময় নন্দের দল সমাজবাদী পার্টি।

রায়গঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে তার পরাজয়কে ‘স্যাবোটাজ’ মনে করছে দলটির রাজ্য কমিটি।

এ অবস্থায় বামফ্রন্টে থাকা উচিত হবে না বলে মনে করছে সমাজবাদী পার্টির একটা বড় অংশ। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে দলের আগ্রায় অনুষ্ঠেয় জাতীয় পরিষদে।
আগামীকাল সোমবার আগরায় শুরু হচ্ছে দলটির জাতীয় পরিষদের সভা। সেখানে যোগ দিতে রাজ্য থেকে ৫৫ জন প্রতিনিধি যাচ্ছেন।

কিরণময় নন্দ বলেন, ‘ আমরা বামফ্রন্ট থাকব কি-না, তা নিয়ে আলোচনা হবে। দলের প্রধান মুলায়ম সিং যাদব সিদ্ধান্ত নেবেন এ বিষয়ে। ’

বিধানসভার নির্বাচনের ফল নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা সিপিএম’র থেকে কম মার্জিনে হেরেছি। ওদের থেকে আমাদের বিধানসভায় ফল ভালো হয়েছে।

এ হারের জন্য সিপিএমকে সরাসরি দোষারোপ করে কিরণময় নন্দ বলেন, ‘ সিএম’র সঙ্গে থাকায় মানুষ আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন। ’

বিধানসভা ভোটের পর বাম শরিকের এ কথায় এখন চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে বামফ্রন্টের অভ্যন্তরে। বাকি শরিকরা এখন এ পথ ধরলে বামফ্রন্ট ভাঙনের মুখে তা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৪ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।