কলকাতা: কলকাতার বাজারগুলোর রঙ এখন ‘কমলা’। কারণ বাজারগুলো ছেয়ে গেছে কমলায়।
কলকাতার প্রায় সব বাজার ঘুরে কোথাও দার্জিলিংয়ের কমলার ঘ্রাণ পাওয়া গেলো না। ব্যবসায়ীরা কেউ বলেছেন ফলন কম। কেউ বলেছেন, বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে দার্জিলিংয়ের কমলা। কিন্তু মূল কারণগুলো একেবারেই ভিন্ন।
শিলিগুড়ির সিটি সেন্টারে ‘অ্যাসোসিয়েশন অব কনজারভেশন অ্যান্ড ট্যুরিজম’র উদ্যোগে ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে তিন দিনের কমলা উৎসব। সেখানে হাজির হয়েছেন কমলা চাষিরা। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গেল, দার্জিলিংয়ের প্রায় সব বাগানেই কমলার ফলন খুবই খারাপ।
পাহাড়ে কমলা চাষের জন্য বিখ্যাত সিটুং ব্লকেও এবার পরিস্থিতি শোচনীয়। কমলার মৌসুমে বিগত বছরগুলোতে প্রতিদিন গড়ে দশ গাড়ি করে কমলা শিলিগুড়ির বাজারে আনা হতো। এবার একটি গাড়িও আসেনি।
চাষিরা জানান, কোনো কোনো বাগানে কমলার ফলন হয়েছে। কিন্তু তার আকার এতোই ছোট যে সেগুলি বিক্রি করার মতো নয়।
একই অবস্থা নেপালের কমলার বাগানগুলোর ক্ষেত্রেও। সেখানে কিছু কমলার উৎপাদন হলেও তার পরিমাণ অন্যবারের থেকে কম। জানা গেছে, ফলন এতোটাই খারাপ যে কমলা গাছ কেটে জ্বালানি করে দিতে চান চাষিরা।
এই ভয়াবহ পরিস্থিতির কারণ কি? সরকারি কর্মকর্তাদের সূত্রে, তিনটি কারণ উঠে আসছে। প্রথমত তুষারপাত, দ্বিতীয়ত লেবুতে ঝারি পোকার আক্রমণ এবং তৃতীয়ত দূষণ। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জৈব সারের ব্যবহার না করা।
চাষিদের সঙ্গে কথা বলে আরও একটি বিষয় সামনে এসেছে। তারা জানিয়েছেন, এই বছর ‘লিন ইয়ার’। অর্থাৎ এই বছরে এমনিতেই কম ফলনের বছর। তার উপর তুষারপাত, পোকার আক্রমণে ব্যাহত হয়েছে কমলা উৎপাদন।
অন্যদিকে নাগপুরে লেবুর ফলন হয়েছে যথেষ্ট ভালো। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রাজস্থানের কমলা। এর ফলে বাজারে কমলাবুর অভাব না থাকলেও দার্জিলিংয়ের কমলা বাজারে নেই।
তবে আশার কথা জানিয়েছেন চাষিরা, আগামী বছর ভালো ফলন হবে। তাদের দাবি সরকারি সাহায্য।
তাই আগামী বছরের আশা রেখেই এ বছর নাগপুরের কমলাতেই ‘দুধের স্বাদ ঘোলে’ মেটাচ্ছেন কলকাতাবাসী।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০১৬
ভিএস/জেডএস