ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগুন: নিহত তালহার মায়ের কথা রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৪
বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগুন: নিহত তালহার মায়ের কথা রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ

নীলফামারী: ট্রেনে আগুন লাগার ৪০ দিন পর নীলফামারী সৈয়দপুরে বাংলাদেশ আর্মি ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (বিএইউএসটি) ছাত্র মো. আবু তালহার (২৪) মরদেহ শনাক্ত হয়েছে।  

ডিএনএ টেস্টের পর বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে মরদেহগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে রেলওয়ে পুলিশ।

শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) পারিবারিক কবরস্থানে আবু তালহার দাফন সম্পন্ন হয়।

ঢাকা কমলাপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদাউস আহাম্মেদ বিশ্বাস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।  

তিনি বলেন, বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন পোড়া চারটি মরদেহের চেহারা দেখে শনাক্ত করার উপায় ছিল না। আদালতের আদেশে দাবিকৃত স্বজনদের ও মরদেহের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে সিআইডি ল্যাবে ক্রস ম্যাচিং করা হয়। তারপর মরদেহগুলো শনাক্ত করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হলো।  

তিনি আরও বলেন, বিএইউএসটির শিক্ষার্থী আবু তালহার মরদেহ গ্রহণ করেছেন তার মামা মনিরুল ইসলাম।

নিহত আবু তালহার বাবা আব্দুল হক কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় আবু তালহার মরদেহ বহনকারী গাড়িটা গ্রামের বাড়িতে পৌঁছেছে। শুক্রবার সকাল ১০টায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন কার্য সম্পাদন হবে। অবশেষে এক মাস ৯ দিন পর ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে তার মরদেহ পাওয়া গেল।  

এদিকে নিহত আবু তালহার মা মাহফুজা ফেরদৌসীর কথা রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তালহার ছোট ভাই আবু তাসলামকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রথম সেমিস্টারে ভর্তি করে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তার পুরো সেমিস্টারের টিউশন ফি মওকুফ করা হয়েছে। আবু তাসলাম ফরিদপুর রাজেন্দ্র সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিষয়ে অনার্সের শিক্ষার্থী ছিলেন।  

ইউনিভার্সিটির অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের প্রধান ও ছাত্র কল্যাণ উপদেষ্টা রাকিবুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।  

তিনি বলেন, নিহত আবু তালহার মায়ের আকাঙ্ক্ষা ছিল ছেলেকে প্রকৌশলী বানাবে। আর সে লক্ষ্যে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি করায় ছেলেকে। মা মাহফুজা ফেরদৌসীর সেই আশা পূরণে ছোট ছেলে আবু তাসলামকে ওই বিভাগে ভর্তি করে নেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষ তার পুরো সেমিস্টারের টিউশন ফি মওকুফ করেছে। তিনি বর্তমানে আবাসিক হলে থেকে ক্লাস করছে।

এর আগে গত ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় আবু তালহা ফরিদপুর স্টেশন থেকে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের ‘চ’ নম্বর বগিতে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করেন। তিনি কমলাপুর স্টেশনে নেমে উত্তরাঞ্চলের ট্রেনে করে সৈয়দপুরে আসতেন। ওই দিন রাত ৯টার দিকে ঢাকার গোপীবাগে ট্রেনে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে আবু তালহার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।  

তিনি সৈয়দপুর বাংলাদেশ আর্মি ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (বিএইউএসটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী। থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. জিকরুল হক হলের ৩০৫ নম্বর কক্ষে।  

নিখোঁজের বিষয়টি জানার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক আবু তালহার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের নির্দেশনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ উপদেষ্টা, এমই বিভাগের প্রধান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী তালহাকে খুঁজে পেতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালান।  

বাংলাদেশ সময়: ১০০৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।