ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

‘পায়ে ধরি স্যার, দয়া করে পরীক্ষা নেন’

ইবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৭
‘পায়ে ধরি স্যার, দয়া করে পরীক্ষা নেন’ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ইবি: ‘স্যার আজ ৭ বছর হলো আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি। পরিবার আর পারছেনা, মরে যেতে ইচ্ছা করছে আমাদের। বার বার আন্দোলন করে খবরে এসে বিভাগ ও বিশ্ববিদ্যালয়কে ছোট করতে আমাদের লজ্জা লাগে। পায়ে ধরি স্যার আমাদের বাঁচান, আপনি আমাদের পিতা, আমাদের পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা না করলে আমাদের বেঁচে থাকাই দায়। তা না হলে মরে গেলে বেঁচে যেতাম।’

কথাগুলো বলছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।

রোববার (১৯ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে পরীক্ষার দাবিতে অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচিতে এসব কথা বলেন শিক্ষার্থীরা।

এসময় শিক্ষার্থীরা উপাচার্য অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী বরাবর স্মারকলিপি দেন।

এতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে বিভাগের সংকট কাটিয়ে তোলার আশ্বাস দিলে তারা অবস্থান ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেন।

বিভাগীয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বিভাগের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের মাস্টার্সের পরীক্ষা শেষ হলেও সিএসসি বিভাগ এখনো পরীক্ষা গ্রহণ শুরু করতে পারেনি। ফলে চতুর্থ সমাবর্তনে অনার্সের সার্টিফিকেট পেলেও মাস্টার্সের সার্টিফিকেট পাচ্ছেন না ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

২০১১-১২ এবং ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদেরও একই অবস্থা। ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষ এখনো অনার্স পরীক্ষা শেষ করতে পারেনি এবং ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা ৫ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো অনার্সের ক্লাস শেষ করতে পারেননি।

এছাড়া ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষ ৪ বছরে এখনো তৃতীয় বর্ষ, ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষ দ্বিতীয় বর্ষ, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষ প্রথম বর্ষের পরীক্ষা দিতে পারেনি।

এতে ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাদের অন্ধকার ভবিষ্যৎ দেখছেন। বিভিন্ন সময় বিভাগে তালা দেওয়াসহ অবস্থান ধর্মঘট করলেও এর কোনো সুফল পাচ্ছেন না তারা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিভাগের সিনিয়র শিক্ষকদের কারণে পরীক্ষা গ্রহণ হচ্ছেনা। পরীক্ষা কমিটিতে সিনিয়র শিক্ষকদের দায়িত্ব দেওয়া হলেও তারা কোনো কারণ না দেখিয়ে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন। যার ফলে বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের একাধিকবার পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হলেও পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি।

শিক্ষার্থীদের এ অভিযোগ অস্বীকার করে ওই বিভাগের সিনিয়র অধ্যাপক ড. আহসানুল আম্বিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ‘এ অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। সিনিয়র শিক্ষকদের সম্পর্কে ছাত্রদের এমন মন্তব্যের পেছনে অন্য কোনো কারণ রয়েছে। ‌‌‌‌’

তিনি আরো বলেন, ‘পরীক্ষা কমিটি নিয়ে দ্বিমত থাকায় বিভাগীয় সভাপতিকে একাধিকবার সাধারণ সভা করার তাগিদ দেওয়া হয়। কিন্তু তিন মাস ধরে সভাপতি সাধারণ সভার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করতে না পারায় বিভাগের পরীক্ষা আটকে আছে। ’

এ বিষয়ে বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক মো. নজরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং ট্রেজারার স্যার আমাদের সঙ্গে বসবেন। আশা করি আমরা একটা সমাধান পাবো। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৭
টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।