ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

করোনার চোখ রাঙানি, ৪ পাবলিক পরীক্ষা নিয়ে উৎকণ্ঠা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৯ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০২১
করোনার চোখ রাঙানি, ৪ পাবলিক পরীক্ষা নিয়ে উৎকণ্ঠা

ঢাকা: ফের বেড়েছে করোনা মহামারির প্রকোপ। দিন যাচ্ছে আর চোখ রাঙাচ্ছে করোনা।

স্কুলের পাঠ বন্ধ এক বছরের বেশি সময়। এবছর চারটি বড় বড় পাবলিক পরীক্ষায় করোনার প্রভাব স্পস্ট হয়ে উঠেছে।  

প্রাথমিক স্তরের প্রাথমিক-ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী, অষ্টমের জেএসসি-জেডিসি মাধ্যমিক স্তরের এসএস ও সমমান এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নেওয়া এবছর অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় পরীক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে।

বুধবারের (২৩ জুন) সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে ২৪ ঘণ্টায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৮৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময় আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৭২৭ জন।  

করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় বুধবার (২৩ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এক ব্রিফিংয়ে জানিয়েছে, পরিস্থিতি নাজুক হলে সারাদেশেই ‘কঠোর লকডাউন’ দেওয়া হবে। অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন বলেন, সারাদেশে আপাতত লকডাউন নয়। তবে পরিস্থিতি যদি নাজুক হয় এবং প্রতিটি জেলায় যদি সংক্রমণ ২০ শতাংশের উপরে চলে যায়, তা হলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির কারণে ইতোমধ্যে ঢাকা ঘিরে সাত জেলা- মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, গাজীপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী ও গোপালগঞ্জে লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। করোনা পরিস্থিতি নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রতিদিনই বিভিন্ন বিভাগের সঙ্গে বৈঠক করছে। পরিস্থিতি দেখে কঠোর সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলেও সরকারের পক্ষ থেকে আভাস এসেছে।

গত কয়েক বছর থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ফেব্রুয়ারির শুরুতে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা এবং এপ্রিলে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নিয়ে আসছে। আর নভেম্বরে প্রাথমিক সমাপনী এবং অষ্টমের সমাপনী পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে।

পরীক্ষার্থী-অভিভাবকদের উদ্বেগের মধ্যে করোনার সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এরইমধ্যে জানিয়েছে যে, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে বলেন, আমরা জানি এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা ভীষণ উদ্বেগের মধ্যে আছে। আমরা এটা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা করছি। আমরা খুব শিগগিরই সিদ্ধান্তটি জানিয়ে দেবো। আর বেশি দিন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে থাকতে হবে না।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ২০২০ সালে এসএসসি পরীক্ষা হয়েছিল, সেটার ফলাফল আমরা প্রকাশ করেছি। এইচএসসি বিকল্প পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করেছি।

এসএসসিতে ৬০ দিন এবং এইচএসসিতে ৮৪ দিনের সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে জুন-জুলাইয়ে এসএসসি এবং সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু মহামারির কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না বলে বোর্ড এবং মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। পরে এসএসসির জন্য অ্যাসাইনমেন্ট দিয়ে পাঠদান চালু রাখা হয়েছে। কিন্তু ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির মতো এসএসসির অ্যাসাইনমেন্টও নিয়মিত করা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বাংলানিউজকে বলেন, লকডাউন দেওয়ার কারণে আমরা সব উপ-পরিচালককে নির্দেশনা দেবো যাতে তারা সুবিধামতো সময়ে যেন অ্যাসাইনমেন্ট জমা নেওয়ার ব্যবস্থা করেন।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, করোনা পরিস্থিতিতে যেভাবে অবনতি হচ্ছে তাতে আসন্ন প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা নেওয়া অসম্ভব হয়ে যাবে। আর শিক্ষার্থীদের ক্লাসে নিতে না পারলে পরীক্ষাও ফলপ্রসূ হবে না। এ নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০২১
এমআইএইচ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।