ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

কমিটিতেই আবদ্ধ কুবির অনলাইন পরীক্ষা কার্যক্রম!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৯ ঘণ্টা, জুলাই ২, ২০২১
কমিটিতেই আবদ্ধ কুবির অনলাইন পরীক্ষা কার্যক্রম!

কুমিল্লা: চলমান কোভিড পরিস্থিতিতে অনলাইনে পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্কটমুক্ত করার কথা ভাবছে দেশের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়। তবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু কমিটিতেই আটকে আছে এ সংক্রান্ত কার্যক্রম!

অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়া ‘অসম্ভব’ বলে জানিয়েছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী।

শিক্ষার্থীদের আটকে থাকা পরীক্ষার ব্যাপারে সমাধান জানতে চাইলে তিনি এ কথা বলেন।

উপাচার্য বলেন, 'অনলাইন পরীক্ষা তো ইম্পসিবল! কেউ পারতেছে না। অনলাইনে প্রথম কথা হচ্ছে নেট থাকে না, ক্লাসই করতে পারে না। সবাই তো এটেন্ডই করতে পারবে না। '

কোভিড-১৯ মহামারির কারণে দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) বিভিন্ন বিভাগে বড় ধরনের সেশন জট সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে বন্ধে আটকে থাকা পরীক্ষাগুলো সশরীরে গ্রহণ শুরু করেও তা মাঝপথেই দুইবার স্থগিত হয়ে যায়।

সেশনজটের ধাক্কা সামলাতে  ডিজাস্টার রিকভারি প্ল্যান ও অনলাইন পরীক্ষার জন্য কমিটি গঠন করা হলেও প্রশাসন থেকে কমিটিগুলোর আহ্বায়ক দুজন এ সংক্রান্ত কোনো চিঠি পাননি এবং কার্যক্রম শুরুরও কোনো আভাস পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় শিক্ষা জীবন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে দ্রুত সংকট নিরসনে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা।

আইন বিভাগের ২০১৬-১৭ আবর্তনের শিক্ষার্থী বিবি মারিয়া পরীক্ষা স্থগিত হওয়া সেশনজট নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, 'আমাদের ২০২০ সালে গ্রাজুয়েশন শেষ করার কথা ছিল। সেশনজট আর মহামারির কারণে প্রায় দেড় বছর পিছিয়ে গেলো। অফলাইনে না হলেও অনলাইনে অন্তত কোনো ব্যবস্থা করে পরীক্ষাগুলো নিয়ে নিলে এই সেশনজট থেকে মুক্তি মিলবে আমাদের। '

এদিকে পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ নূরুল করিম চৌধুরী বলেন, 'অনলাইনে পরীক্ষার ব্যাপারে আমাদের কাছে এখনো কোনো সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা আসেনি। ইতোমধ্যে অনলাইন পরীক্ষার ব্যাপারে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে, ওই কমিটি থেকে যেই সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা আসবে সেই আলোকেই আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে থাকব। '

অনলাইন পরীক্ষা গ্রহণ সংক্রান্ত বিষয়ের জন্য গঠিত কমিটির আহ্বায়ক ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন মো. তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘এটা আসলে কমিটিটা যে হয়েছে, সেটা একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটে যতদূর জানি পাশ হয়েছে। চিঠি এবং টার্মস এন্ড কন্ডিশনগুলো না জানা পর্যন্ত কিছু বলতে পারছি না। চিঠি পেলে আমরা কাজ শুরু করতে পারবো। '

ডিজাস্টার রিকভারি প্ল্যান কমিটির আহ্বায়ক মো. রশিদুল ইসলাম শেখ বলেন, 'আপনারা যেটা শুনেছেন, আমাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এটা হরো মৌখিক আদেশ। কাগজপত্র পেলে আমি বুঝব আমাকে আসলে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কাগজপত্র না পেলে আমি কী করে বুঝব আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে? আনুষ্ঠানিক চিঠি পেলেই যতদ্রুত সম্ভব ওই নির্দেশনার আলোকে আমরা কমিটি মেম্বাররা মিটিং কল করে সেই বিষয়ে একটা কর্মপরিকল্পনা তৈরি করব। '

সার্বিক বিষয়ে কুবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী বলেন, 'আমরা অপেক্ষা করছি, যদি অবস্থা খারাপ হয়, আমাদের তো শিডিউল আছেই, যারা ফাইনাল ইয়ার, যেমন মাস্টার্স ২-১ টা পরীক্ষা বাকি আছে বা অনার্স তাদেরকে অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা রুটিনটা রিশিডিউল করে শুরু করে দিবো। প্রত্যেকটা দিনই তো এখন আনসার্টেইন, অবস্থা একটু ভালো হলে আবার শিডিউল দিয়ে দিবো। '

অপরদিকে কমিটি দুটির আহ্বায়কদের কাছে চিঠিপত্র না পৌঁছানোর বিষয়ে করোনা ও লকডাউনের কথা উল্লেখ করে কুবি উপাচার্য বলেন, 'চিঠি পেয়ে যাবেন, কাজ শুরু করে দেবেন, আমি বলবো। '

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫২ ঘণ্টা, জুলাই ০২, ২০২১ 
এসএইচডি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।