ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

বিশ্ববিদ্যালয় খোলার দাবিতে জাবিতে প্রতীকী ক্লাস

জাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০২১
বিশ্ববিদ্যালয় খোলার দাবিতে জাবিতে প্রতীকী ক্লাস ...

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি): করোনা ভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ তৈরির দাবিতে প্রতীকি ক্লাস নিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন।

বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে ক্লাস শুরু করেন তিনি।

পরবর্তীতে বৃষ্টি হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের করিডোরে ক্লাস নেন।

প্রতীকী ক্লাসে অধ্যাপক রায়হান রাইন ‘উত্তর আধুনিকতা ও ফ্যাসিবাদ’ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

ক্লাস শেষে দুপুর দেড়টায় ফুলবাড়ি দিবস উপলক্ষ্যে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তারা।

প্রতীকী ক্লাসের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, আসলে এভাবে শিক্ষাব্যবস্থা চলতে পারে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলায় বিষয়ে সরকারের যে ভাবনা, আমি মনে করি তা যৌক্তিক নয়। এটা নিয়ে সরকারের ভাবা উচিত, অন্যদের সঙ্গে কথা বলা উচিত। বলা হচ্ছে যে, টিকা দেওয়ার পর নাকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার বিষয়ে সরকারের যথাযথ পদক্ষেপ আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়নি। সরকার টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে যে বয়স নির্ধারণ করেছে, তাতে শিক্ষার্থীদের টিকা নেওয়ার সুযোগ নেই। তাই প্রতিবাদের অংশ হিসেবে আমরা খোলা মাঠে ক্লাস নিচ্ছি।

ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী শাকিল ইসলাম জানান, অনেকদিন পর স্বশরীরে ক্লাসে অংশ নিতে পেরেছি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাই ক্লাস করছে। আমাদের মধ্যে কোনো ভয়-ভীতি কাজ করছে না। ক্লাসরুমে ক্লাস করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। দ্রুতই যাতে বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক হল ও শিক্ষা কার্যক্রম খুলে দেওয়া হয় সেই দাবি জানাচ্ছি।

এদিকে প্রতীকী ক্লাসে অংশগ্রহণে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা জানান, সকাল থেকেই ইসলামনগর বাজার সংলগ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট দিয়ে যানবহন প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা ফটকে গণমাধ্যমকর্মীদেরও প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, প্রশাসন যে বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে চায় না এটা তারই বহিঃপ্রকাশ। তারা ফটক বন্ধ করে প্রতিবাদে অংশগ্রহণে বাধা দিয়ে এটাই প্রমাণ করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিবুল হক বলেন, এতোদিন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামনগর সংলগ্ন গেট দিয়ে যানবহন চলাচল শিথিল ছিল। কিন্তু হুট করেই আজ (২৬ আগস্ট) সকাল থেকে গেট দিয়ে যানবহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন কার্যক্রমকে কোনোভাবেই কাঙ্খিত মনে করছি না। এই ঘটনার দ্বারা প্রশাসন প্রমাণ করলো যে তারা বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিতে কতটা অনাগ্রহী।

ইসলামনগর গেটের দায়িত্বরত গার্ড বলেন, সকালেই জানানো হয় যে আজ শহীদ মিনারে কোনো এক শিক্ষক ক্লাস নিবেন। এজন্য শিক্ষক ছাড়া আর কাউকে যেন রিকশা নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকতে না দেই। যদি কারো জরুরি প্রয়োজন থাকে তাহলে প্রক্টরের সঙ্গে কথা বলে অনুমতি নিতে বলা হয়েছে। আমি এখানে সেই দায়িত্বই পালন করছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, আমি তো বিশ্ববিদ্যালয়ের গেইটের ব্যাপারে কিছুই জানি না। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের গেইটের দায়িত্ব নিরাপত্তা অফিসের। সুতরাং আমি এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারি না।

অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন বলেন, গেট বন্ধ রাখার কোনো নির্দেশনা আমি দেইনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০২১
কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।