ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

বিসিসি নির্বাচন: প্রচারণার শেষ দিনে প্রার্থীদের নানান অভিযোগ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৩ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০২৩
বিসিসি নির্বাচন: প্রচারণার শেষ দিনে প্রার্থীদের নানান অভিযোগ শেষ দিনের প্রচারণায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত

বরিশাল: বরিশাল সিটি নির্বাচনে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস বলেছেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে সংশয় এখনও কাটেনি।  আমরা প্রতিনিয়ত হুমকি-ধমকির সম্মুখীন হয়েছি।

গত রাতে আমাদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সেক্রেটারির বাসায় গিয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছে, তিনি যেন কেন্দ্রে না যান।

শনিবার (১০ জুন) সকালে নির্বাচনী প্রচারণা ও গণসংযোগে নেমে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী।

ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, আমরা খবর পেয়েছি গতরাতে পলাশপুর কলোনিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা ২ হাজার টাকা খামে ভরে বিলি করেছে। এছাড়া আমরা দেখছি গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন সাংঘাতিকভাবে তৎপর আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে। সবকিছু মিলিয়ে যা দেখলাম, তাতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীই চান না এখানে সুষ্ঠু নির্বাচন হোক এবং তার সাথে সহযোগিতা করছে গোয়েন্দা সংস্থা ও আওয়ামী লীগের কর্মীরা। আমি নির্বাচন কমিশনারকে হাতজোড় করে মিনতি করতে চাই, তিনি যেন বিষয়গুলো দেখেন এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার চেষ্টা করেন। আর না করলে আগামী ডিসেম্বর বা জানুয়ারিতে যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে, সেটি কিন্তু প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

তিনি আরও বলেন, সারা পৃথিবী এখন তাকিয়ে আছে আমাদের বরিশালের নির্বাচনের দিকে। বরিশালের নির্বাচন দুটি কারণে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, একটি হলো প্রধানমন্ত্রীর ভাই এখানে নির্বাচন করছেন। আর দ্বিতীয় হলো, সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, সেটিতে সচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা দেখাতে হবে। আমার মনে হচ্ছে না প্রধানমন্ত্রী ঢাকা থেকে কোনো নির্দেশনা দিচ্ছেন। স্থানীয়ভাবেই আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজগুলো করা হচ্ছে।

জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী বলেন, যারা ভোটার তারা নির্ভয়ে সকল বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে ভোটকেন্দ্রে আসবেন এবং লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দিয়ে আমাকে বিজয়ী করবেন।

অন্যদিকে ৫ জন কর্মীকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছেন বিএনপি পরিবারের সন্তান ও নির্বাচনে টেবিলঘরি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রুপন। শনিবার (১০ জুন) দুপুরে বরিশাল প্রেসক্লাবে ইশতেহার ঘোষণা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

রুপন বলেন, নানানভাবে হয়রানি ও ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে আমার কর্মীদের। তবে যত বাধাই আসুক না কেন কোনো রক্তচক্ষুকে ভয় না করে নির্বাচনের মাঠে শেষ পর্যন্ত আমি থাকব। আর নিশিরাতের এই সরকার যদি বিগত দিনের মতো ফলাফল চাপিয়ে না দেয় তাহলে ফলাফল যাই হোক মেনে নেব। ভোটাররা বাধাবিহীন ভোট দিতে পারলে বিজয়ী হবেন বলে দাবি করেন তিনি।

পুলিশের পক্ষ থেকে হয়রানি বা সাদা পোশাকধারীদের তৎপরতা রয়েছে কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি সাংবাদিকদের মাধ্যমেই প্রথম শুনেছি। এ ধরনের কোনো বিষয় মেট্রোপলিটন এলাকায় জানা নেই। এ ধরনের অভিযোগ থাকলে প্রার্থীকে সরাসরি নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করার পরামর্শ দেন তিনি।

এদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম নির্বাচনী মাঠের পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত ভালো দেখছেন বলে জানিয়েছেন। শনিবার সকালে গণসংযোগকালে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়েছি, ভোটাররা ভোট দেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। তারা যদি নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে, তাহলে আশা করায় যায় বিপুল ভোটে হাতপাখাকে বিজয়ী করবে।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের হাজার হাজার কর্মী শহরে ঢুকেছে, তারা প্রভাব সৃষ্টি করতে চায় কিনা জানি না। তবে আমি ভোটারদের বলব, যতই হাতির দাঁত দেখানো হোক না কেন, তারা যেন ভোটকেন্দ্রে যায়। আওয়ামী লীগের তৎপরতা বলে দিচ্ছে সুষ্ঠু ভোট হবে, কারণ তারা তো ভোট নেওয়ার পার্টি, ভোট চাওয়ার পার্টি না। যেহেতু তারা ভোট চাওয়ার জন্য নামছে, তাহলে তারা নিশ্চিত ভোট নিতে পারবে না।

মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেন, আমার পর্যবেক্ষণে ১২৬টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ আওয়ামী লীগ প্রতিটি সেন্টার দখল করার প্ল্যান করেছে। জানি না বাস্তবায়ন করতে পারবে কিনা। তাদের বিভিন্ন জায়গা থেকে হাজার হাজার লোক ঢুকছে। কোনো কলেজ ক্যাম্পাস ও হোটেল খালি নেই। তবে জানি না তারা শুধু প্রচারের জন্য এসেছে কিনা, আজ চলেও যেতে পারে।

কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ না করলেও সমাজের অবহেলিত ও দরিদ্র মানুষের সাথে ধর্মের মাধ্যমে প্রতারণা করা সবচেযে সহজ ব্যাপার এবং সেই পথটাই কেউ কেউ অবলম্বন করছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত।

আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যদের অভিযোগ হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থীর হয়ে নারীকর্মীরা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ধর্মগ্রন্থ ব্যবহার করে ভোট প্রদানে ওয়াদাবদ্ধ করছে সাধারণ নারীদের। তবে এ অবিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম। তিনি বলেন, আমাদের কর্মীরা এসব পন্থা অবলম্বন করে না, অন্যরা এ পন্থা অবলম্বন করে আমাদের ওপর চাপিয়ে দিতে চায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১১ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০২৩
এমএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।