ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

প্রতিনিয়ত মজুরি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন নারী শ্রমিকেরা

মো. আমিরুজ্জামান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৩ ঘণ্টা, মে ১, ২০২৪
প্রতিনিয়ত মজুরি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন নারী শ্রমিকেরা

নীলফামারী: প্রচণ্ড রোদে পুরুষের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাজ করছেন নারীরা। যেখানে পুরুষরা কাজ করতে গিয়ে হাঁপিয়ে উঠছেন, সেখানে নারীরা কাজ করছেন আপনমনে।

ফাঁকি নেই নারীর কাজে। তবুও মজুরিতে বৈষম্য। একজন পুরুষ শ্রমিক যেখানে সারা দিন কাজ করে পাচ্ছেন ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, সেখানে নারী পাচ্ছেন ২৫০ থেকে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা।  

পুরুষের যেমন দল আছে তেমনি নারীরাও কৃষি কাজ করার জন্য তৈরি করেছেন দল। পুরুষের দলে ১২ থেকে ২০ জন থাকেন। তেমনি নারীদের ছয় থেকে ১০ জন করে দল রয়েছে। যেখানে রয়েছেন বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা কিংবা অভাবী নারীরা। এখন গ্রামের ইরি-বোরো জমিতে আগাছা পরিষ্কার করছেন পুরুষ ও নারী শ্রমিকরা।  

বিঘা চুক্তি কিংবা দিন চুক্তিতে কাজ করছেন তারা। এ কাজ করে একজন পুরুষ শ্রমিক পাচ্ছেন ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা আর একই কাজ করে নারী শ্রমিকরা পাচ্ছেন সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা। নারী শ্রমিক আসমা খাতুন (৫৫) জানান, বিচার নাই। হামরা গরিব মানুষ। যা পাই তাতে কাজ করি। বেশি কথা বললে কাজে না নেওয়ার হুমকি দেন মালিকরা। হামরা যেটুকু কাজ করি, তা মন দিয়া করি। আমাদের কাজের কোনো অভিযোগ করতে পারেন না মালিকরা।  

সকাল সকাল নারীরা সংসারের কাজ শেষ করে সকাল ৯টার মধ্যে জমিতে যান। সেখানে আসরের আজান পর্যন্ত কাজ করেন মাঠে।  

মাঠে কাজ করা স্বপ্না (৪৫), দুলারী (৩৭) ও রোখসানা বেগম (৫৩) শ্রমিক জানান, পুরুষের সমান মজুরি চাওয়া যায় না, চাইলে কাজ দেবে না। তাই চুপ থেকে যা পান তা নিয়ে ঘরে যান তারা।  

তারা জানান, তারা দিনমজুরি দেন। নারী অধিকার ও দিবস সম্পর্কে তেমন জানাশোনা নেই। কোনো কাজে ফাঁকি দেন না নারীরা। আবার অনেক ক্ষেত্রে অতিরিক্ত শ্রম দেন। অথচ মজুরি পান কম।

জেলার সৈয়দপুরে অবস্থিত নোয়াহ্ তৈজসপত্র তৈরির কারখানায় কর্মরত সুফিয়া বেগম (৪৬) জানান, মে দিবস টে দিবস বুঝি না। কাজ করি ভাত খাই। কাজ কম হলে মজুরি কম। পুরুষের সমান কাজ করছি কিন্তু মজুরি পাচ্ছি কম। এসব দেখার কেউ নেই। তবে কারখানার পরিবেশ খুব ভালো।

এছাড়া বাণিজ্যিক শহর সৈয়দপুরের কল-কারখানা, চাতাল, বিভিন্ন জায়গায় নারীরা কাজ করছেন। নারীরা যুগের পর যুগ এভাবে মজুরি বৈষম্যের শিকার হলেও দেখার কেউ নেই। কল-কারখানায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করা নারীরাও মজুরি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। মে দিবসের দিনও কাজ করতে হয় বলে জানান অনেকে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৯ ঘণ্টা, মে ১, ২০২৪
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।