ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

তারাবো বাজারে বাঁশের মেলা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৬
তারাবো বাজারে বাঁশের মেলা ছবি: কাশেম হারুন-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: বাঁশের রকমের শেষ নেই- বরাক, রেগুন, মুলি, দুলো, টেংরি, পেঁচা, মাহাল, সাদ্দাম, চেওরাসহ কত বাহারি নাম! সারি সারি সাজানো শীতলক্ষ্যা নদীর সুলতানা কামাল সেতুর পূর্ব পাশে। নারায়ণগঞ্জের তারাবো বাজারে গেলেই চোখে পড়বে অজস্র বাঁশের সারি।

 


স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মতে, এ বাঁশপট্টির যাত্রা পাকিস্তান আমলে। তারাবো বাঁশপট্টি নামেই পরিচিত। তবে কবে থেকে এ বাঁশপট্টি তা সুস্পষ্ট করে বলতে পারেনি কেউ।


এ‌ বাঁশপট্টিতে ব্যবসা করেন এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলা জানা যায়, তারা বংশপরম্পরায় এ ব্যবসা করছেন। দাদা বাবার পরে পর্যায়ক্রমে ব্যবসা করছেন। তাদের দাবি, এটি বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ পাইকারি ও খুচরা বাঁশ বিক্রির বাজার।


কতটুকু জায়গা নিয়ে বাঁশপট্টি অবস্থিত তার সঠিক তথ্য জানা না গেলেও নদীর পাড় ঘেঁষে লম্বায় অন্তত ৫শ’ ফুটের কম হবে না বলেই মত ব্যবসায়ীদের।

অতীতে জায়গা আরও বড় ছিল। সরকারের অধিগ্রহণের কারণে বাঁশপট্টির জায়গা কমে গেছে। এখানে ছোট-বড় মিলে গদি আছে প্রায় দেড় শতাধিক।


কতজন শ্রমিক কাজ করেন, প্রশ্নের জবাবে তারা জানান, সবমিলে হাজারের কম হবে না। সরকারের কাছ থেকে বাৎসরিক ৫ লক্ষাধিক টাকায় লিজ নিয়ে তারা এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।

ব্যবসায়ীরা জানান, সরকারের অধিগ্রহণের কারণে তাদের জায়গা ছোট হয়ে আসছে। ফলে দিন দিন ছোট হয়ে আসছে তাদের বাব‍া-দাদার ব্যবসা।


এখানে বিভিন্ন প্রজাতির বাঁশ পাওয়া যায়। যেমন বরাক বাঁশ, রেগুন বাঁশ, ওরা বাঁশ, মলি বাঁশ, দুলো বাঁশ, টেংরি বাঁশ, পেঁচা বাঁশ, মাহাল বাঁশ, সাদ্দাম বাঁশ, চেওরা বাঁশ ইত্যাদি।


পাইকারি ও খুচরা- উভয়ভাবেই বাঁশ বিক্রি হয় এখানে। বাশেঁর সাইজ ও প্রকারভেদে খুচরা বাঁশ হালি ৪০টাকা থেকে শুরু করে ৫শটাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। আর পাইকারি বাঁশ সাইজ ও প্রকারভেদে বিক্রি হয় ৭/৮ টাকা থেকে শুরু করে ১শ টাকা পর্যন্ত প্রতি পিস।


প্রতি দোকানে ১০ ফুট ও ১২ ফুট আকারে বাঁশ সাইজ করা থাকে। ক্রেতার চাহিদা অনুসারে যে কোনো সাইজ তারা কেটে সরবরাহ করেন। আস্ত বাঁশ ছাড়াও এখানে বাঁশের তৈরি মাচা বিক্রি হয়।


এসব বাঁশের বেশীরভাগ আসে ময়মনসিংহ ও কাপাসিয়া থেকে। ওইসব অঞ্চলের বাঁশের চাহিদা নাকি অনেক। অল্পকিছু বাঁশ আসে টাঙ্গাইল থেকে।

এই বাঁশপট্টির বাঁশ ঢাক‍ার চাহিদা মিটিয়ে কুমিল্লা, সিলেট, চট্টগ্রামসহ সারা দেশে সরবরাহ করা হয়। সারা বছরই এখানে বেচা-কেনা চলে। তবে বৈশাখ থেকে আষাঢ় হচ্ছে তাদের ব্যবসার ভরা মৌসুম।

বাংলাদেশ সময়: ১১০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৬
এএ/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।