ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ভোলায় দেড় মাসে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত ৭৫০, মৃত্যু ৬

ছোটন সাহা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২৩
ভোলায় দেড় মাসে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত ৭৫০, মৃত্যু ৬

ভোলা: গত কয়েকদিন ধরে দিনে গরম রাতে শীত অনুভূত হচ্ছে উপকূলীয় জেলা ভোলায়। আবহাওয়ার এমন বিরূপ প্রভাবে শিশুদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে নিউমোনিয়া, জ্বর, সর্দি, কাশিসহ নানা রোগ।

এতে হাসপাতালে চাপ বেড়েছে রোগীদের।  
কিন্তু ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে শয্যা সংকট থাকায় গাদাগাদি করে রোগীদের সেবা নিতে হচ্ছে। আর রোগীর চাপ থাকায় তাদের চিকিৎসা দিতে দিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন ডাক্তার-নার্সরা।

এদিকে গত ৪০ দিনে হাসপাতালে নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ৭৫০ জন রোগী। যাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। শিশুদের মধ্যে রোগ ছড়িয়ে পড়ায় আতঙ্কিত অভিভাবকরা।

আবহাওয়া অফিস বলছে, শীতের প্রকোপ পুরোপুরি কেটে গেলেও দ্বীপজেলা ভোলায় রাতের চেয়ে দিনের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরে দিনের তাপমাত্রা কখনও ৩৪ ডিগ্রি কখনও বা ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ওঠা-নামা করছে। কিন্তু রাতের তাপমাত্রা কমে যাচ্ছে। এ কারণে কখনও গরম আবার কখনও শীত অনভূত হচ্ছে।

প্রকৃতির এমন বৈরি ভাব মানিয়ে নিতে পারছে না শিশুরা। আর তাই জ্বর-সর্দি কাশি, শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়াসহ শীত জনিত রোগে প্রকোপ বেড়েছে শিশুদের। হাসপাতালে বাড়ছে শিশু রোগীদের চাপ। শিশুদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় অভিভাবকরা।

শিশুদের অভিভাবক সালমা আক্তার ও সিরাজ বলেন, দিনে গরম পড়লেও রাতে শীত অনুভূত হয়। তাই আবহাওয়ার সঙ্গে শিশুরা মানিয়ে নিতে পারছে না।  আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে শিশুদের নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। এতে আমরা খুবই টেনশনে আছি।

হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, ভোলার ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে গত ৪০ দিনেই আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন সাড়ে সাতশ রোগী। যাদের মধ্যে মারা গেছে ছয়জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়েছে ৯৫ জন শিশু।

রোগীর চাপ থাকায় শয্যা সংকট দেখা দিয়েছে। এতে এক শয্যায় একাধিক রোগীকে গাদাগাদি করে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।

শহরের চরনোয়াবাদ থেকে চার মাস বয়সী নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশুকে ভর্তি করিয়ে তিনদিন ধরে চিকিৎসা করাচ্ছেন তানিয়া আক্তার নামে এক অভিভাবক। তিনি বলেন, সিট পাই না, তাই দুইজন শিশু একটি বেডে চিকিৎসা নিচ্ছে। এতে আমাদের চিকিৎসা নিতে গিয়ে অসুবিধা হচ্ছে।

আরেক অভিভাবক জিহাদুল ইসলাম বলেন, প্রথমে শিশুর ঠাণ্ডা লাগছে, এখন শ্বাসকষ্ট। বেড সংকট থাকায় গাদাহাদি করে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। দিন দিন বাড়ছে রোগীদের চাপ আর তাই চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন নার্সরা।

শিশু ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স সেলিনা আক্তার বলেন, রোগীর চাপ অনেক বেশি, তবুও আমরা সাধ্যমত চিকিৎসা দেওয়ার চেস্টা করছি।

আবহাওয়ার পরিবর্তনজনিত কারণে শিশুদের রোগ ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। প্রয়োজনীয় সেবা দিতে সর্বাত্নক চেস্টা চলছে বলে জানান হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মু. মনিরুল ইসলাম।  

তিনি বলেন, বেড সংকট থাকায় রোগীদের কিছুটা অসুবিধা হচ্ছে আমরা বেড বাড়ানোর চেস্টা করছি। তবে রোগীদের জন্য পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ রয়েছে। আবহাওয়ার গরম-ঠাণ্ডা ভাব স্বাভাবিক হলে এমন সমস্যা থাকবে না। এমন পরিস্থিতিতে শিশুদের প্রতি অভিভাবকদের আরও বেশি যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫২ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।