কলকাতা: রাহুল গান্ধির মামলা শুরু হতেই থামিয়ে দিলেন বিচারক। স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, তিনি এই মামলা শুনতে পারবেন না।
মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) সুরাট আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে গুজরাট হাইকোর্টে আবেদন করেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি। বুধবার (২৬ এপ্রিল) সেই মামলার শুনানি শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই তা বন্ধ হয়ে যায়।
কারণ, আচমকাই মামলা থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন বিচারক গীতা গোপি।
এদিনই (২৬ এপ্রিল) মামলার শুনানি শুরু হয় বিচারপতি গীতা গোপির এজলাসে। রাহুলের পক্ষে শুনানি শুরু করেন আইনজীবী পিএস চম্পানেরি। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই বিচারপতি জানিয়ে দেন, ‘আমি এই মামলা শুনব না’।
ফলে শুরু হতেই বন্ধ হয়ে যায় রাহুল গান্ধির মামলার শুনানি।
কংগ্রেস নেতার আইনজীবী জানান, মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) আদালতের তরফে অনুমতি দেওয়া হয় যে, বুধবার (২৬ এপ্রিল) বিচারপতি গীতা গোপির এজলাসে মামলা শুরু করতে। এই বিচারপতির অধীনেই মামলার শুনানি করা হয়, কারণ তিনি এই ধরনের মামলার বিচার দিয়ে থাকেন। কিন্তু আচমকা বিচারপতির সরে দাঁড়ানোর কোনো কারণ জানা যায়নি। আপাতত বন্ধ থাকবে এই মামলার শুনানি। গুজরাট হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। তিনি যেন অন্য কোনো এজলাসে মামলার শুনানির ব্যবস্থা করেন।
হাইকোর্ট সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) অন্য কোনো বিচারপতির এজলাসে শুনানির জন্য রাহুলের আবেদন নথিভুক্ত হতে পারে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ভারতে লোকসভা ভোটের প্রচারের সময় কর্নাটকের কোলারে ‘মোদি’ পদবি তুলে আপত্তিকর মন্তব্যের দায়ে অপরাধমূলক মানহানির মামলায় গত ২৩ মার্চ রাহুল গান্ধিকে ২ বছরের কারাদণ্ড দেয় সুরাটের নিম্ন আদালতের বিচারক এইচএইচ বর্মা। আদালতের দেওয়া সেই রায়ের জেরে একদিন পরেই সাংসদ পদ খোয়াতে হয় কংগ্রেসের সাবেক সভাপতিকে।
যদিও সাজা শোনানোর পরই রাহুলকে ৩০ দিনের জন্য শর্তসাপেক্ষে জামিন দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয়, এই ৩০ দিনের মধ্যে উচ্চতর আদালতে এই রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করারও সুযোগ পাবেন রাহুল।
পরবর্তীতে এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুরাটের নগর দায়রা আদালতে আপিল করেন রাহুল। গত ১৩ এপ্রিল আপিলটি ওঠে সুরাটের নগর দায়রা আদালতে। ২০ এপ্রিল শুনানিতে রাহুলের দাবি ছিল, তার রাজনৈতিক পরিচয়ে প্রভাবিত হয়ে অতিরিক্ত শাস্তি দিয়েছেন নিম্ন আদালত। কিন্তু নগর দায়রা আদালতের বিচারক পি মোগেরা রাহুলকে কোনোরকম স্বস্তি দেননি। রাহুলের আরজি খারিজ করে দেয় নগর দায়রা আদালতও। সেদিনই কংগ্রেসের তরফে ইঙ্গিত দিয়ে রাখা হয় যে, আরও উচ্চতর আদালতে আপিল করবেন রাহুল।
তবে নিম্ন আদালতের রায় নগর দায়রা আদালতে বহাল থাকলেও সেদিন রাহুল গান্ধিকে একটি বিষয়ে স্বস্তি দেওয়া হয়। জামিনের আবেদন নিয়ে চূড়ান্ত আইনি লড়াই শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি মুক্ত থাকবেন। অর্থাৎ পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে পারবে না। রাহুলেরও আদালতে আত্মসমর্পণ করার প্রয়োজন নেই।
পরে নিম্ন আদালতের সেই রায়কেই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) হাইকোর্টে আপিল করেন রাহুল গান্ধি।
বাংলাদেশ সময়: ২৩৪১ ঘণ্টা, ২৬ মার্চ, ২০২৩
ভিএস/এনএস