ঢাকা, শুক্রবার, ১৬ মাঘ ১৪৩১, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ০০ শাবান ১৪৪৬

ভারত

শুরু হল ৪৮তম কলকাতা বইমেলা, আমন্ত্রণ পেল না বাংলাদেশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০২৫
শুরু হল ৪৮তম কলকাতা বইমেলা, আমন্ত্রণ পেল না বাংলাদেশ ৪৮তম কলকাতা বইমেলা

কলকাতা: চিরাচরিত প্রথা মেনে হাতুড়ির শব্দে পর্দা উঠল ৪৮তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলার।  

মঙ্গলবার(২৮ জানুয়ারি) বিকেলে কলকাতা সংলগ্ন সল্টলেকের ‘বইমেলা প্রাঙ্গণ’এ মেলার উদ্বোধন করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

 

এবারের থিমকান্ট্রি জার্মানি। থিমকান্ট্রি ছাড়াও অংশ নিচ্ছে বিশ্বের ২০টি দেশ ও ভারতের প্রায় সবকটি রাজ্য। আজ থেকে শুরু হয়ে বইমেলা চলবে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এবারের বইমেলায় প্রকাশক ও লিটল ম্যাগাজিন মিলিয়ে সর্বাধিক প্রায় এক হাজার প্রকাশনী সংস্থা অংশ নিয়েছে।

তবে এই প্রথম বইমেলায় অংশ নিল না বাংলাদেশ। যা নিয়ে হতাশ মেলার আয়োজক কমিটি থেকে পাঠক সমাজ এবং বিশিষ্টরা। অপরদিকে, কলকাতার বাংলাদেশ মিশন জানাচ্ছে তাদের অফিসিয়ালি আমন্ত্রণ জানায়নি আয়োজক কমিটি পাবলিশার্স এন্ড বুক সেলার্স গিল্ড। তারা আমন্ত্রণ পেয়েছিল থিমকান্ট্রি জার্মানি থেকে। যে কারণে তারা উদ্বোধনে অনুষ্ঠানে অংশ নেয়নি।

মূলত প্রথা অনুযায়ী, অংশ নিক বা না-নিক। আয়োজকরা কলকাতায় অবস্থিত প্রতিটা দেশের মিশন কর্মকর্তাদের আমন্ত্রণ জানিয়ে থাকে। পাশাপাশি আমন্ত্রণ জানায়, সংশ্লিষ্ট থিমকান্ট্রি। কিন্তু এবার পাবলিশার্স এন্ড বুক সেলার্স গিল্ড থেকে বাংলাদেশ আমন্ত্রণ পায়নি। এমনটা জানিয়েছে কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন।

এ বিষয়ে আয়োজক কমিটির সম্পাদক শুধাংশু দে জানান, বিষয়টা তার জানা নেই, এমনটা হওয়ার কথা নয়। খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে, জানান তিনি। পাশাপাশি তিনি বলেছেন, কিন্তু আমাদের কাছে খুবই কষ্টের বিষয় এবারে বাংলাদেশ অংশ নেয়নি। বাংলাদেশ আমাদের অতি কাছের এবং সেখানে বহু মানুষ, প্রকাশক, লেখকদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক। তারা অংশ নেয়নি এটা আমাদের কাছে খুবই বেদনাদায়ক বিষয়। আমি মনে করি বইয়ের কখনো ভাগ হতে পারে না। বইয়ের কখনো পার্টিশন হয় না।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা সবার সেরা। বইমেলা আমাদের গর্ব, আমাদের হৃদয়ের উৎসস্থল থেকে উৎসারিত এক শরণী। আমরা বইমেলাকে বলি বইবৃক্ষ। বৃক্ষ যেমন নিঃসঙ্গকে সঙ্গ দেয়, বই তেমন।  

একইসাঙ্গে তিনি বলেছেন, গত বছর ৩০ কোটি রুপির বই বেচাকেনা হয়েছে। এসছিলেন ২৭ লাখ মানুষ। এবার আশা করি, তারচেয়ে বেশি বই বিক্রি হবে এবং আরও বেশি মানুষ আসবেন। কারণ, বাংলার মানুষ বইমেলাকে ভালবাসেন।

এবারের বইমেলায় থিমকান্ট্রি জার্মানি। তাই মেলা প্রাঙ্গণের কেন্দ্রে রয়েছে জার্মানির বিশাল প্যাভেলিয়ান। জার্মানি ছাড়া অংশ নিয়েছে ব্রিটেন, আমেরিকা, ফ্রান্স, রাশিয়া, স্পেন, পেরু, আর্জেন্টিনা, গুয়াতেমালাসহ অন্যান্য লাতিন আমেরিকার একাধিক দেশের প্যাভিলিয়ন। থাকছে বহুজাতিক প্রকাশনা সংস্থা এবং ভারতের প্রায় সব রাজ্যের প্রকাশনা সংস্থা।

তবে ভারতের সাথে রাজনৈতিক টানাপোড়নের কারণে এই প্রথম কলকাতা বইমেলায় অংশ নিল না বাংলাদেশ। ফলে এবছর বাংলাদেশি লেখক, কবি, সাহিত্যিকদের মিস করবেন কলকাতার পাঠকরা। এমনটাই জানিয়ে, শুরুর দিনে মেলায় আসা বইপ্রেমীরা।

গতবছর কলকাতা বই বেলায় বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন সেজে উঠেছিল ইউনেস্কো স্বীকৃত ঢাকার রিকশা ও রিকশা চিত্রে। মূলত বইমেলায় বিভিন্ন দেশ অংশ নিলেও আলাদা গুরুত্ব পেয়ে থাকে বাংলাদেশে। ধারণা করা হচ্ছে বাংলাদেশ অংশ না নিলে অনেকটাই শক্তি হারাবে কলকাতা বইমেলার। কারণ পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি পাঠকের একটা বড় অংশ নজর রাখে বাংলাদেশের কবি সাহিত্যিকদের সৃষ্টির উপর। কিন্তু এবছর অংশ নিল না বাংলাদেশ। মেলা কর্তৃপক্ষ ধরে রাখতে পারবে তো বাঙালি পাঠকের আবেগ? এর উত্তর সময় বলে দেবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৬ ঘণ্টা, ২৮ জানুয়ারি ২০২৫
ভিএস/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।