বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও চীন আগামী ২০ বছরের মধ্যে বড় ধরনের পানি সংকটে পড়বে। এতে এসব অঞ্চলে খাদ্যঘাটতি দেখা দেবে এবং উদ্বাস্তু সমস্যার সৃষ্টি হবে।
সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন প্রাকৃতিক কারণে তুষার গলে যাওয়ায় এই চারটি দেশ আগামী দুই দশকে কমপক্ষে ২৭৫ বিলিয়ন কিউবিক মিটার পানি হারাবে। পরিমাণটা নেপালের নদী-জলাশয়গুলোতে এ মুহুর্তে যে পরিমাণ পানি আছে , তার চেয়ে বেশি। হিমবাহগুলোর তুষার গলে যাওয়া এসব প্রাকৃতিক কারণের একটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নদী শুকিয়ে যাওয়ায় হিমালয় অববাহিকার দেশগুলোতে শুরু হবে মরুকরণ প্রক্রিয়া। বাড়তে থাকবে ভূমিক্ষয়। এ দুয়ের প্রভাব পড়বে চীন এবং ভারতের ধান এবং গমের জমিতে। ২০৫০ সালের মধ্যে এদুটি দেশে ধান ও গমের উৎপাদন ৫০ ভাগ কমে যাবে। উৎপাদন কমে গেলে চীন ও ভারতকে ২০ থেকে ৩০ কোটি টন গম ও চাল আমদানি করতে হবে।
প্রতিবেদনে পরামর্শ দেওয়া হয়, এই চারটি দেশের উচিত হবে নদী ব্যবস্থাপনায় এক সঙ্গে কাজ করা।
সংস্থার প্রধান সন্দ্বীপ ওয়াসলেকর সিঙ্গাপুরে আন্তর্জাতিক পানি সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি আগামী ২০/২৫ বছরে এই অঞ্চলে পানির ক্রম বর্ধমান ঘাটতি ধরনের বিপর্যয় সৃষ্টি করতে যাচ্ছে। ’
ওয়াসলেকর জানান, চীন ও ভারতে ধান ও গমের উৎপাদন কমে গেলে বিশ্বের খাদ্যবাজারে নেমে আসবে চরম বিপর্যয়। আঞ্চলিক সীমানা ছাড়িয়ে এর প্রভাব গিয়ে পড়বে গোটা দুনিয়ার মানুষের ওপর। এ বিপর্যয়ের কারণে খাদ্যের দাম বেড়ে যাবে। ক্রমবর্ধমান এই পানি-ঘাটতির কারণে ২০৫০ সালের মধ্যে এই চারটি দেশের কোটি কোটি মানুষ উদ্বাস্তুতে পরিণত হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা দিব্যি দেখতে পাচ্ছি, এই ভয়াবহ পানি-বিপর্যয়ের কারণে ১০ কোটিরও বেশি মানুষ ঘরছাড়া হবে। এ কারণে দেশগুলোতে বাড়তে থাকবে অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষ-সংঘাত। পাশাপাশি প্রতিবেশি দেশগুলোর সঙ্গেও তারা জড়িয়ে পড়বে যুদ্ধবিগ্রহে। ’
উল্লেখ্য, হিমালয় অববাহিকার নদীগুলোর মধ্যে বিশেষ করে চীনের পীতনদী ও ইয়াংজি নদী অববাহিকায় এবং ভারতের গঙ্গা নদী অববাহিকায় ১৩০ কোটি লোকের বাস।
বাংলাদেশ সময় ১৭৫৬ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০১০