ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

একদিন এই যুদ্ধ বন্ধ হবে, গাজায় ফিরবে ‘খায়ের-বরকত’ 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪
একদিন এই যুদ্ধ বন্ধ হবে, গাজায় ফিরবে ‘খায়ের-বরকত’ 

গাজার শীতকাল এক সময় অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল। এখানে শীত ছিল ‘খায়ের’ এবং ‘বরকত’– অর্থাৎ ভালোবাসা ও আশীর্বাদ নিয়ে আসে সবসময় এমন ধারণাই করা হত।

শিশু থেকে বয়স্ক সবাই শীতের আগমনের জন্য অপেক্ষা করতো, যা গ্রীষ্মের তাপ থেকে মুক্তি দিত।

বৃষ্টির আগমনে, শিশুরা রাস্তায় ছুটে যেত এবং আনন্দের সঙ্গে গান গাইতো। এই বৃষ্টি গাজার কৃষকদের জন্য আশীর্বাদ ছিল, এতে তারা নতুন মৌসুমের জন্য প্রস্তুতি নিত। বাজারে স্থানীয় সবজি ও ফলমূল ভরে যেত।

পরিবারগুলো টিভির সামনে বসে সিনেমা বা নাটক দেখতো। শীতল ও শুষ্ক দিনগুলোতে অনেকেই সমুদ্রের তীরে হাঁটতে বের হতো, বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতো। সেখানে পোড়া ভুট্টা এবং কাজু বাদামের সুগন্ধ বাতাসে ভাসতো।  

অনেকেই বিখ্যাত মিষ্টির দোকান ‘আবু আল সাউদ’-এ গিয়ে গরম কুনাফাহ খেতে থামতো– অথবা বাদাম ভর্তি আরবি কুনাফাহ বা পনির ভর্তি নাবুলসিয়া নিত। শহরের বাসিন্দারা বৃষ্টির দিনে বাড়িতে আরাম করতেন, উষ্ণ কম্বলে জড়িয়ে বা আগুনের চারপাশে বসে চা পান করতেন।

তবে বর্তমানে, গাজার সেই শীতকাল দূরতম স্মৃতিই মনে হচ্ছে। আবু আল সাউদ-এর দোকানও নেই, সেই আনন্দ আর নেই।

গাজায় এই বছর শীতকাল ‘খায়ের’ এবং ‘বরকাত’ নিয়ে আসেনি, বরং অসহনীয় কষ্ট ও হতাশা নিয়ে এসেছে। বৃষ্টি এখন অভিশাপ হয়ে উঠেছে, মানুষ শুকনো আবহাওয়ার প্রার্থনা করছে, কারণ বৃষ্টি-বন্যার কারণে বাস্তুচ্যুতদের শিবিরগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে।

গাজার ১০ লাখেরও বেশি মানুষ এই শীতল আবহাওয়া থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারছে না। তাদের অস্থায়ী আশ্রয়গুলো খুবই দুর্বল, যা বৃষ্টি ও বাতাসে টিকে থাকতে পারে না। রাতের বেলা পরিবারের সদস্যরা তাদের তাঁবুগুলি ধরে রাখতে বাধ্য হয়, যাতে তা উড়ে না যায়।

শীতল আবহাওয়ার সঙ্গে খাদ্যের অভাবও দেখা দিয়েছে। গাজায় খাদ্যের মূল্য এখন আকাশচুম্বী; ময়দার একটি ব্যাগের দাম প্রায় ২৪ হাজার টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। অনেকেই খাদ্যের অভাবে কষ্ট পাচ্ছে এবং তাঁবুগুলোতে সারা রাত ক্ষুধার্ত শিশুদের কান্না শোনা যাচ্ছে।

গাজার মানুষের স্মৃতিতে এক সময়ের উষ্ণতা ও আনন্দ ম্লান হয়ে গেছে। তাদের আশা একদিন এই যুদ্ধ ও নিধন বন্ধ হবে। গাজায় আবার ‘খায়ের’ এবং ‘বরকাত’ ফিরে আসবে।

আল জাজিরায় প্রকাশিত ইমান আলহাক আলির কলামের সংক্ষিপ্ত অনুবাদ  

বাংলাদেশ সময়: ১১০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪
এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।