ঢাকা: সিডনিতে জিম্মি সঙ্কটের সমাধান হয়েছে। ১৬ ঘণ্টা পর পুলিশি অভিযানের মাধ্যমে জিম্মি নাটকের অবসান ঘটল।
অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানায়, বন্দুকধারী গুলিতে নিহত হয়েছেন। আর ডেইলি মেইল একজন জিম্মি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে।
এর আগে ভারি অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সিডনিতে ক্যাফেতে অভিযান চালায় পুলিশ ও বিশেষ বাহিনী। এসময় ভেতর থেকে উচ্চ শব্দ শোনা গেছে। পরে
কয়েকজন জিম্মিকে ভবনের ভেতর থেকে স্ট্রেচারে করে বের করতে দেখা গেছে। কয়েকজন নিরাপদেও বের হয়েছেন।
ওই ক্যাফেতেই ৪০ জনের মতো বেসামরিক নাগরিককে জিম্মি ছিল বন্দুকধারী।
এদিকে অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন গণমাধ্যম ও কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো বন্দুকধারীর পরিচয় প্রকাশ করেছে।
ইরানি বংশোদ্ভূত ওই বন্দুকধারীর নাম ম্যান হারোন মনিস। বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় তিনি জামিনে ছিলেন।
বিবিসির খবরে বলা হয়, মনিস অস্ট্রেলিয়ায় রাজনৈতিক আশ্রয়ে ছিলেন। তার সঙ্গে আত্মীয় স্বজন কেউই থাকত না।
নিউজ সাউথ ওয়েলসের প্রদেশের পুলিশের মুখপাত্র জানান, সকাল পৌনে ১০টার দিকে লিন্ডট চোকোলেট ক্যাফেতে হামলা চালিয়ে লোকজন জিম্মি করার খবর আসে। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে গিয়ে বিভিন্ন গোয়েন্দার কর্মকর্তারাসহ নিরাপত্তা বাহিনী ঘিয়ে ক্যাফেটি ঘিরে ফেলেন।
স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে, একদিকে যখন স্থানীয় প্রশাসন সমঝোতার চেষ্টা করছে তখন অন্যদিকে দফায় দফায় জরুরি বৈঠকে বসছে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ। বৈঠকের পর নাগরিকদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে এবং পরিস্থিতি সতর্কতার সঙ্গে সামাল দিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, জিম্মি সংকটের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী টনি অ্যাবোট জাতির উদ্দেশে দুই দফা ভাষণে সকলকে সতর্ক থাকতে বলেছেন। একইসঙ্গে এই ঘটনা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানিয়েছেন।
এই প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জরুরি বৈঠক করে জাতীয় সংকট নিরসনে মতৈক্যের কথা জানিয়েছেন বিরোধী দলীয় নেতা বিল শর্টেন। তিনি সরকারকে সার্বিক সহযোগিতা এবং সমর্থন দেওয়ার কথা জ্ঞাপন করেছেন। বিল শর্টেন বলেন, অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সার্থে এবং নিরাপত্তার ইস্যুতে আমরা এক এবং অভিন্ন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মার্টিন প্লেস এলাকায় যানচলাচলে সীমাবদ্ধতা জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি মার্টিন প্লেসসহ সিডনির জনগণকে নিরাপদে সরে থাকতে বলা হয়েছে।
স্থানীয় কর্মকর্তারা বলছেন, ইতোমধ্যে সিডনি শহরের স্থল, নৌ এবং আকাশ পথে ব্যাপক নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বাস, ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সিডনি শহরের ওপর দিয়ে নিরাপত্তায় নিয়োজিত হেলিকপ্টার ছাড়া সব ধরনের বিমান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সিডনির হারবার ব্রিজ, অপেরা হাউজসহ বিশেষ বিশেষ স্থাপনাও। এছাড়া, সিডনি এয়ারপোর্টেও বিশেষ নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
এই সন্ত্রাসী হামলা ও জিম্মি সংকটের প্রেক্ষিতে অস্ট্রেলিয়ায় কর্ম ও ভ্রমণরত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সতর্ক থাকতে বলেছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে নিরাপত্তার কারণে সিডনিস্থ মার্কিন কনস্যুলেট কার্যালয়ও খালি করে ফেলা হয়েছে।
এই হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কানাডার প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হারপারসহ বিশ্ব নেতারা।
** সিডনির বন্দুকধারীর পরিচয় মিলেছে
বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৪