ঢাকা: নিখোঁজ এয়ার এশিয়ার প্লেনটি জাভা সাগরের তলদেশে আছে। সোনার থেকে পাঠানো চিত্র দেখে এমনটি ধারনা করছে ইন্দোনেশিয়ার অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল।
জাভা সমুদ্রের তলদেশে প্রেরিত সোনার থেকে বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) পাঠানো এক ছবির তথ্য তুলে ধরে বিষয়টি জানিয়েছে দলটি।
দলের কর্মকর্তা হারনান্তো জানান, সমুদ্রের তলদেশে ৩০-৫০ মিটার লম্বা একটি বস্তু দেখা গেছে।
তিনি বলেন, প্রার্থণা করি এটি যেন ওই প্লেনের হয়, তাহলে উদ্ধার কাজ দ্রুত সম্পন্ন সম্ভব হবে।
তবে বৈরি আবহাওয়া ও প্রবল স্রোতের কারণে উদ্ধার কাজ বিঘ্নিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম।
এদিকে, মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) জাভা সাগরে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা প্লেনের দুই আরোহীর মরদেহ ইন্দোনেশিয়ায় পৌঁছেছে। তবে তাদের পরিচয় জানা যায়নি।
হংকংভিত্তিক পত্রিকা সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানায়, নিখোঁজ এয়ার এশিয়ার কিউজেড ৮৫০১ ফ্লাইটটির হতভাগ্য আরোহীদের ৪০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
তবে সিঙ্গাপুর ভিত্তিক চ্যানেল নিউজ এশিয়া সর্বশেষ সাতজনের মরদেহ উদ্ধারের কথা জানিয়েছে। এর মধ্যে চারজন পুরুষ ও তিনজন নারী।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে ইন্দোনেশিয়ার বিমান বাহিনীর কর্মকর্তা অগাস দুই পুতরান্তো এক সংবাদ সম্মেলনে প্রথম প্লেনটির ‘ধ্বংসাবশেষ’ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে।
তিনি বলেন, রাডারের সঙ্গে প্লেনটির যোগাযোগের সর্বশেষ স্থান থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে ১০টি ‘ধ্বংসাবশেষ’ পাওয়া গেছে। এছাড়া সাদা রঙের ছোট ছোট আরো কয়েকটি ‘বস্তু’ পাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন তিনি।
নৌবাহিনী কর্মকর্তা মানাহান সিমোরাঙকিংর বরাত দিয়ে স্থানীয় টিভি ওয়ান জানায়, ওই স্থানে অনেক আরোহীকে পাওয়া গেছে। তবে তারা জীবিত না মৃত সে বিষয়ে কিছু বলেননি ওই নৌ কর্মকর্তা। এছাড়া উদ্ধারকারীরা ওই স্থানে সাগরতলে একটি প্লেনের ছায়াও দেখতে পেয়েছেন বলে জানিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার সংবাদমাধ্যম।
ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব জাভার সুরাবায়ায় অবস্থিত জুয়ানদা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রোববার ভোরে স্থানীয় সময় সকাল ৫টা ৩৫ মিনিটে ওড়ার ৪৫ মিনিট পরই এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে সংযোগ হারিয়ে ফেলে এয়ার এশিয়ার এয়ার বাস ৩০০-২০০ প্লেনটি। সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমান বন্দরে অবতরণ করার কথা ছিলো প্লেনটির।
ইন্দোনেশিয়ার কর্তৃপক্ষের বরাতে জানা গেছে, সামনে পড়া মেঘের স্তর এড়াতে কন্ট্রোল রুমের কাছে আরও উপরে ওঠার অনুমতি প্রার্থনা করেন প্লেনটির পাইলটরা। এর কয়েক মিনিটের মধ্যেই প্লেনটির সঙ্গে কন্ট্রোল রুমের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে এরপরই তীব্র ঝড়ের মুখে পড়ে প্লেনটি।
প্লেনটিতে ৭ ক্রু ও ১৫৫ যাত্রী মিলিয়ে মোট ১৬২ জন আরোহী ছিলেন। এদের মধ্যে ২ পাইলট ৫ ক্রেবিন ক্রু ছাড়া ১৪৯ জন যাত্রীই ইন্দোনেশিয়ান। বাকি ছয়জনের মধ্যে তিনজন দ.কোরিয়ান, একজন মালয়েশিয়ান, একজন সিঙ্গাপুরিয়ান ও একজন ফরাসি।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৪