ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

কাশ্মীরে জোট সরকার

মোদীর উপস্থিতিতে শপথ নিলেন মুফতি সাঈদ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫০ ঘণ্টা, মার্চ ১, ২০১৫
মোদীর উপস্থিতিতে শপথ নিলেন মুফতি সাঈদ ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: জম্মু-কাশ্মীরের বিধান সভার ভোট হয়ে গেছে দুই মাস। কিন্তু কোনো দলই প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় ভোটের পর থেকেই চলছিলো সরকার গঠন নিয়ে নানামুখী টানাপড়েন।



অবশেষে মুখ্যমন্ত্রী পদে পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির (পিডিপি) প্রধান মুফতি মুহম্মদ সাঈদ শপথ নেয়ার মাধ্যমে কাটলো এই অচলাবস্থা। শপথে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সরকার গঠনে পিডিপিকে সমর্থন দিচ্ছে বিজেপি।

ভারতের ইতিহাসে এই প্রথমবারের মত জম্মু-কাশ্মীর সরকারের শরীক বিজেপি, হোক না তা কোয়ালিশন সরকার। এজন্যই বিজেপির কাছে জম্মু-কাশ্মীর এতটা তাৎপর্যপূণ। শপথ অনুষ্ঠানে তাই উপস্থিত থাকলেন মোদী।

এছাড়া ভোটের আগে মোদী অঙ্গীকার করেছিলেন ভোটে জিতে এবার জম্মু-কাশ্মীরেও সরকার গঠন করবে বিজেপি। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠতার অভাবে একক সরকার গঠন করতে না পারলেও কোয়ালিশন সরকারে শরীক হয়ে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর মত  অঙ্গীকার কিছুটা হলেও বজায় রাখলেন মোদী।  

রোববার জম্মু বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন মুফতি সাঈদ। উপমুখ্যমন্ত্রীর শপথ নেন বিজেপি নেতা নির্মল সিংহ। মুফতির শপথ অনুষ্ঠানে নরেন্দ্র মোদীর পাশাপাশি সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ ও লালকৃষ্ণ আদভানির মত হেভিওয়েটরাও।

গত বছরের ২৩ ডিসেম্বরের নির্বাচনে পিডিপি ২৮টি পেয়ে প্রধান সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং ২৫ আসন পেয়ে রাজ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হিসাবে উঠে আসে বিজেপি। অথচ গোটা কাশ্মীরে এর আগে পর্যন্ত বিজেপির তেমন কোনো অস্তিত্বই ছিলো না।

আসন বেশি পেলেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে পিডিপির প্রয়োজন ছিলো আরও ১৮টি আসন। অন্য দিকে প্রতিদ্বন্দ্বী ন্যাশনাল কনফারেন্স ও কংগ্রেস পায় যথাক্রমে ১৫টি ও ১২টি আসন। শুরু হয় দর কষাকষি নিয়ে নানামুখী খেলা।

এ পরিস্থিতিতে রাজ্যে ত্রিশঙ্কু সরকারের ভবিষ্যদ্বাণীও করে ফেলেন কেউ কেউ। সরকার গড়তে পিডিপি কার কার হাত ধরবে তা নিয়ে শুরু হয় জল্পনা। আবার বিজেপি ও পিডিপির অনড় অবস্থানের সুযোগ নিয়ে খেলায় নামে কংগ্রেস ও ন্যাশনাল কনফারেন্স। সরকার গড়তে পিডিপিকে সমর্থনের কথা ঘোষণা করেন কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ। অন্য দিকে বিজেপি-ন্যাশনাল কনফারেন্সকে ( এনসি) নিয়েও শুরু হয় নতুন খেলা।

তবে বিজেপি সাফ জানিয়ে দেয়,  পিডিপি বা এনসি যেই সরকার গড়ুক, তাদের দিতে হবে মুখ্যমন্ত্রীর পদ।

এসব টানাপড়েনের মধ্যেই সরকার গঠনের নির্ধারিত দিন চলে আসে রাজ্যে। কিন্তু তত দিনেও দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় জম্মু-কাশ্মীরে জারি হয় রাজ্যপালের শাসন। অবশেষে দীর্ঘ আলাপ আলোচনার পর বরফ গলে বিজেপি-পিডিপি সম্পর্কের। স্থির হয় সরকার গঠনে পিডিপিকে সমর্থন দেবে বিজেপি। এটাও স্থির হয়, ছ’বছরের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হবে মুফতি মহম্মদ সাঈদ এবং উপমুখ্যমন্ত্রী হবেন বিজেপি নেতা নির্মল সিংহ।

তবে বিতর্কিত ৩৭০ ধারা এবং সামরিক বাহিনীর হাতে বিশেষ ক্ষমতা আইন জারি থাকার ক্ষেত্রে মুখোমুখি অবস্থান নেয় দুই দল।

বিজেপি অনেক আগে থেকেই ৩৭০ ধারার পরিবর্তন চাইলেও এ ব্যাপারে আপোস না করার কথা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন মুফতি। এমনকি সরকার গঠনের পূর্বশর্ত হিসেবে এ ব্যাপারে লিখিত অঙ্গীকার দাবি করে দলটি।

তবে বিজেপি এতে সায় না দিলেও জম্মু-কাশ্মীরে সরকার গঠন করতে আদর্শিক প্রতিষ্ঠান সঙ্ঘ পরিবারের মূল নীতির সঙ্গে অনেকটাই  আপোস করতে বাধ্য হয়েছে তারা। পাশাপাশি সামরিক বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইনের ক্ষেত্রেও পিডিপির দাবি অনেকটাই মানতে হয়েছে তাদের।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫০ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।