ঢাকা: পুরুষ সমাজে প্রচলিত আছে, দু’জন নারী যেখানে থাকেন সেখানে কাজকর্ম বাদ দিয়ে গালগল্পে মেতে ওঠেন তারা। আর যদি তিনজন নারী একত্র হন তবে সেখানে অনেকটা বাজার মতো হয়ে যায়।
প্রচলিত এই কথা যেন প্রতিষ্ঠিতই করলেন ভারতের ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) সংসদ সদস্য সুপ্রিয়া সুলে। সম্প্রতি মহারাষ্ট্রে ছাত্রী ও নারীদের নিয়ে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে কথা বলছিলেন তিনি।
সুপ্রিয়া সুলে বলেন, ‘যখন আমি সংসদে যাই, তখন প্রথম বক্তার বক্তব্য শুনি, দ্বিতীয় জনের শুনি, তৃতীয় জনেরও শুনি। চতুর্থ বক্তা তার আগের বক্তাদের কথাই আবার বলেন। আমায় যদি জিজ্ঞেস করেন, চতুর্থ জন কী বলেছেন? আমি সত্যিই মনে করতে পারবো না। তোমাদের ক্লাসরুমের মতোই আমরা এমপিরা একে-অপরের সঙ্গে গল্পগুজব করতে থাকি। ’
তিনি বলেন, ‘সংসদের ওপরের গ্যালারিতে বসে থাকা লোকেরা অথবা টিভির দর্শকরা আমাদের দেখে ভাববেন আমরা কোনো জাতীয় স্বার্থের বিষয় নিয়ে আলোচনা করছি। যদি আপনি আমাকে চেন্নাইয়ের কোনো এমপির সঙ্গে কথা বলতে দেখেন, তবে মনে করবেন আমরা চেন্নাইয়ের বৃষ্টি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোনো আলোচনা করছি। আসলে সেরকম কিছুই আমরা করি না। কে কোন শাড়িটা কোথা থেকে কিনেছে, কতো দামে কিনেছে, কার প্রসাধনী কেমন- এসব নিয়ে আমরা গল্পগুজব করি। ’
এনসিপির এ নারী এমপি বলেন, ‘সংসদের পুরুষ সাংসদরা আমায় রাগিয়ে বলেন, যদি এখানে মেয়েদের জন্য ৫০ শতাংশ আসন সংরক্ষণ করা হয়, তাহলে সংসদে শুধু পার্লার, ফেসিয়াল আর শাড়ি নিয়েই আলোচনা হবে। আমি তখন বলি, আমাদের শাড়ি নিয়ে বলছেন, আপনারাও দেশের জন্য ভালো কিছু করেননি, কাজেই আমাদের এসব কথায় দোষের কিছু নেই। ’
তার ওই অনুষ্ঠানের পর ভারতীয় সংবাদ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। রাজনীতি বিশ্লেষকদের মন্তব্য, সুপ্রিয়া সুলে যা বলেছেন, তা নিছক মজার ছলে। কিন্তু এটা মেনে নেওয়ার মতো নয়। এমপিদের পারিশ্রমিক ক্রমাগত উর্ধ্বমুখী হলেও তাদের দায়বদ্ধতাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর প্রশ্ন তোলার সুযোগ দিচ্ছেন তারাই।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০১৫
এইচএ