বুধবার (২২ নভেম্বর) নেদারল্যান্ডের দ্য হেগে জাতিসংঘের যুদ্ধাপরাধ বিষয়ক ট্রাইব্যুনাল এ রায় ঘোষণা করেন। বিচারকদের বিরুদ্ধে চেঁচামেচির কারণে রায় ঘোষণার সময় এজলাসে ছিলেন না ৭৪ বছর বয়সী ম্লাদিচ।
‘বসনিয়ার কসাই’ কুখ্যাত এই বসনীয় সার্ব কমান্ডারের বিরুদ্ধে ১১টি যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ ছিল। এর ১০টিতেই তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
নিজের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন ম্লাদিচ। তার উচ্চরক্তচাপের অজুহাত দেখিয়ে রায় ঘোষণা স্থগিত করার আবেদন জানিয়েছিলেন আইনজীবীরা। কিন্তু ট্রাইব্যুনাল সে আবেদন প্রত্যাখ্যান করে রায় ঘোষণা করেন। তবে আইনজীবীরা বলছেন, তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন।
১৯৯২ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুগোশ্লাভিয়া ভেঙে বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা স্বাধীনতার ঘোষণা পাস করলে তা প্রত্যাখ্যান করে বসনীয়-সার্ব রাজনৈতিক নেতৃত্ব। তখন সার্বিয়া সরকারের প্রধান স্লোবদান মিলসোভিচের মদদে বসনীয়-সার্ব বাহিনী এবং যুগোশ্লাভ পিপল’স আর্মি বসনিয়ার সার্বিয়ান অংশটি নিজেদের দখলে নিতে আক্রমণ করে।
এরপর খুব তাড়াতাড়িই পুরো বসনিয়ায় যুদ্ধ শুরু হয়। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জাতীয়তাবাদীরা যুদ্ধে আক্রমণকারী বাহিনীর নৃশংসতার শিকার হতে থাকে। সেজন্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সবচেয়ে ‘বড় ট্র্যাজেডি’ বলা হয় এই যুদ্ধকে।
ম্লাদিচের বিরুদ্ধে সেসময় বহু লোককে হত্যার পরিকল্পনার অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে স্রেব্রেনিৎসায় আট হাজার পুরুষ ও কিশোরকে হত্যা উল্লেখযোগ্য।
যুদ্ধ শেষে ১৯৯৫ সালে ম্লাদিচ লুকিয়ে যান। ১৬ বছর ধরে তাকে খুঁজে ২০১১ সালে গ্রেফতার করা হয়।
তার বিরুদ্ধে এই রায়ে নৃশংসতার শিকার পরিবারগুলোর সদস্য এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা সন্তোষ প্রকাশ করেছে। যদিও অনেকে আরও বড় শাস্তিও ম্লাদিচের প্রাপ্য বলে উল্লেখ করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২২২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৭
এইচএ