বুধবার (৬ ডিসেম্বর) ট্রাম্প ইসরায়েলের তেল আবিব শহরে অবস্থিত বর্তমান মার্কিন দূতাবাসকে জেরুজালেমে স্থানান্তরের ঘোষণা দেবেন বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ।
১৯৬৭ সালের আরব ইসরাইল যুদ্ধের পর ইসরায়েল জেরুজালেমকে রাজধানী হিসেবে ঘোষণা দিলেও এখনও পর্যন্ত তা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করেনি।
ট্রাম্পের এই ঘোষণার আগ দিয়ে বুধবার হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, মঙ্গলবারই ফিলিস্তিন, জর্দান এবং মিশরের নেতাদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে তাদের নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন ট্রাম্প।
এদিকে ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেছে মুসলিম বিশ্বের নেতারা। প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে এসেছে ফিলিস্তিনিরা।
ট্রাম্পের এমন পদক্ষেপের ব্যাপারে চরম হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, এই সিদ্ধান্তের পরিণতি হবে মারাত্মক। এর ফলে শান্তি প্রক্রিয়া এবং এই অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত হবে। যা পুরো বিশ্বেই অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করবে।
জর্দানের রাজা আব্দুল্লাহও ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তার প্রাসাদ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, এই সিদ্ধান্ত এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলবে বলে ট্রাম্পকে জানিয়েছেন রাজা আব্দুল্লাহ।
প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম মার্কিন মিত্র মিশরের প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদের ফাত্তাহ আল সিসি।
এক বিবৃতিতে তিনি ট্রাম্পকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, এর ফলে মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে।
তবে ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের সবচেয়ে কঠোর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন তুরস্কের প্র্রেসিডেন্ট রিসিপ তাইয়েপ এরদোগান।
তেল আবিব থেকে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস সরিয়ে জেরুজালেমে নেয়ার ঘোষণা দেয়া হলে ইসরায়েলের সঙ্গে সব কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
পাশাপাশি এ ঘটনাকে বিশ্ব মুসলিমের জন্য ‘রেডলাইন’ হিসেবেও উল্লেখ করেন তিনি।
প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিও। বুধবার এক বিবৃতিতে ট্রাম্পের পরিকল্পনার তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ তাদের অযোগ্যতা ও ব্যর্থতার প্রমাণ।
ফিলিস্তিনি জনগণকে বঞ্চিত করে তাদের বাস্তুচ্যুত করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ বলে অভিযোগ করেছেন সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এদিকে জেরুজালেমের বর্তমান অবস্থান বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন পোপ ফ্রান্সিসও। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, জেরুজালেমের আল আকসা মসজিদ চত্বরের বর্তমান অবস্থাকে অবশ্যই সম্মান করতে হবে।
১৯৯৪ সাল থেকে জর্দান জেরুজালেমের সব মুসলিম ও খ্রিস্টান ধর্মীয় স্থাপনার তত্ত্বাবধায়ক।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০১৭
আরআই