বেতন বাড়াতে ১৭টি বাস শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকা অনির্দিষ্টকালের এ ধর্মঘটের চতুর্থ দিন রোববার (০৭ জানুয়ারি)। গত বৃহস্পতিবার (০৪ জানুয়ারি) রাত থেকে শুরু হওয়া ধর্মঘটে তামিলনাড়ু রাজ্য পরিবহন কর্পোরেশনের (টিএনএসটিসি) সরকারি কর্মীরাও অংশ নিচ্ছেন।
ধর্মঘটের প্রেক্ষিতে বাস সংকটের মুখে রাজ্য সরকার কাজে যোগ দিতে শ্রমিকদের প্রতি আল্টিমেটাম জারি, বেসরকারি চালক-কন্ডাক্টরদের কাজে লাগানো ছাড়াও ট্রেনের শিডিউল বাড়িয়েছে।
তবে রাজ্য সরকার দাবি করেছে, শনিবার (০৬ জানুয়ারি) রাত থেকে রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থাগুলোর ৬৬.৪৯ শতাংশ বাস চলছে।
পরিবহন শ্রমিকেরা অন্যান্য রাজ্যগুলোর সরকারের পরিবহন সংস্থাগুলোর চালকদের সমতুল্য বেতন দাবি করছেন। শ্রমিক ইউনিয়নগুলো ২.৫৭ শতাংশ বেতন বাড়ানোর দাবি করলেও ২.৪৪ শতাংশ বাড়াতে সম্মত হয়েছে রাজ্য সরকার।
হাজার হাজার যাত্রীকে অসহায় অবস্থায় বাসের অপেক্ষায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে রাজধানীসহ রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন বাস টার্মিনাল ও সরকারি ডিপোগুলোতে।
বেসরকারি বাসগুলোর কিছু কিছু চললেও যাত্রীরা অভিযোগ করছেন যে, সেগুলো সরকারি বাসের মতো গন্তব্যে যাত্রী বহন করেনি। ফলে ক্ষুব্ধ যাত্রীরা বিভিন্ন স্থানে মিছিল-সমাবেশ করে এ অচলাবস্থার নিরসন দাবি করছেন।
‘আমি এখানে দুই ঘণ্টার মতো অপেক্ষা করছি। আমাকে ভাণ্ডালুর যেতে হবে। কিন্তু আমি কোন বাসে যাবো, তা জানি না’- বলছিলেন চেন্নাইয়ের মুফসিল বাস টার্মিনালের যাত্রী কানাগেলে। তিনি বলেন, ‘আমাদেরকে প্রত্যেক বাসের চালককে জিজ্ঞাসা করতে হচ্ছে’।
বেশ কয়েকটি জেলার বেশিরভাগ সড়কে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় পরিবহন বিভাগ কর্তৃপক্ষ অস্থায়ী চালক-কন্ডাক্টর নামিয়ে তাদের সঙ্গে কাজ করার অনুরোধ জানিয়েছে।
মাদ্রাজ হাইকোর্ট শ্রমিকদের ০৫ জানুয়ারির মধ্যে ধর্মঘট বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে অন্যথায় হস্তক্ষেপ ও বরখাস্তের অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষকে।
এর প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার শ্রমিকদের কাজে ফেরত যেতে আল্টিমেটাম জারি করে বলেছে, অন্যথায় আইন অনুসারে ব্যবস্থা নিতে দ্বিধা করবে না।
রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী এম আর বিজয় ভাস্কর অবশ্য দাবি করেন, মাদ্রাজ হাইকোর্টের নির্দেশের প্রতি শ্রদ্ধা ছাড়াও সরকারের বেতন পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত বিবেচনায় কাজে ফিরে আসছেন অনেক শ্রমিক-কর্মচারী।
শনিবার তিনি আশা প্রকাশ করেছিলেন যে, আরও কর্মী কর্মক্ষেত্রে ফিরে আসবেন এবং রোববার অভ্যন্তরীণ ও সারা দেশের সঙ্গে বাস চলাচল ফের চালু হবে।
তবে তার সে আশা পূরণ হয়নি। ট্রেড ইউনিয়নগুলো দাবিতে অনঢ় থেকে বলেছে, তাদের চাহিদামতো বেতন পুনর্বিবেচনা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলতে থাকবে।
ধর্মঘটের কারণে সংকট মেটাতে ও অতিরিক্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা করতে রেলের শিডিউল বাড়িয়েছে দক্ষিণাঞ্চলীয় রেলওয়ে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে চেন্নাই-সৈকত-তামামাম ও এমআরটিএস উপশহর সেক্টরে যেসব বাড়তি ট্রেন চলাচল করে, সেগুলোকে সপ্তাহান্তের পরিবর্তে রোববার চালানো হয়েছে।
চেন্নাই বিচ-তামামমাম বিভাগে লোকাল ট্রেনগুলোও প্রতিটি ২০ মিনিটের পরিবর্তে ১০ মিনিটে এমআরটিএস বিভাগের একটি অতিরিক্ত ট্রেন চলবে বলে দক্ষিণ রেলওয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
রাজ্য বিধানসভার প্রধান বিরোধী দল ডিএমকে ডেমোক্রেটিক সরকারকে ট্রেড ইউনিয়নের সঙ্গে কথা বলার আহ্বান জানিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০১৭
এএসআর