সোমবার (১৫ জানুয়ারি ) মিয়ানমারের সরকার-নিয়ন্ত্রিত পত্রিকা গ্লোব্যাল নিউ লাইট ফর মিয়ানমার এ খবর দিয়েছে ।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনী ও বৌদ্ধ সন্ত্রাসীদের অব্যাহত সহিংসতা ও জাতিগত নির্মূল অভিযানের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে আসা প্রায় ৭ লাখের মতো রোহিঙ্গা।
সোমবারের বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য ছিল বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে গত ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তিটির বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় কর্মপন্থা ও খুঁটিনাটি ঠিক করা।
গ্লোব্যাল নিউ লাইট ফর মিয়ানমার-এর খবরে আরও বলা হয়, রাখাইন রাজ্যের উত্তরাংশের হ্লা পো খাউং এলাকায় ফিরিয়ে নেয়া রোহিঙ্গাদের রাখা হবে। সেখানে তাদের জন্য অস্থায়ীভাবে একটি আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করা হবে। এটি হবে একান্তভাবেই একটি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র বা ট্রানজিশন ক্যাম্প। রোহিঙ্গারা নিজেদের নিজ নিজ বাড়িঘরে ফিরে যাবার আগে এই অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে থাকবে।
পত্রিকাটির ভাষায়, যেসব লোককে ‘পদ্ধতিগতভাবে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য গ্রহণ করা হবে’ তাদেরকেই এই ক্যাম্পে রাখা হবে।
হ্লা পো খাউংয়ে ১২৪ একর জায়গার ওপর তৈরি করা হবে এই অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র। এতে মোট ৬২৫টি বিল্ডিং বা স্থাপনা থাকবে। এর মধ্যে ১০০টি বিল্ডিং নির্মাণের কাজ শেষ হবে চলতি জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে।
মিয়ানমারের ইউনিয়ন এন্টারপাইজেস ফর হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাসিসট্যান্স, রিসেটেলমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট –এর প্রধান সমন্বয়ক আউং তুন থেট সংবাদসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, হ্লা পো খাউংয়ের এই আশ্রয়কেন্দ্রটি হবে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের তাদের নিজ নিজ বাড়িঘরে (প্লেস অব অরিজিন) বা তাদের বাড়িঘরের কাছের আশ্রয়কেন্দ্রে ফিরিয়ে নেবার আগের আশ্রয়কেন্দ্র।
তিনি আরো বলেন, "যারা বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে ফিরে আসবে আমরা তাদের সবাইকে গ্রহণ করার চেষ্টা করবো। ’’
‘‘ফিরে আসাদের বাড়িঘর কোথায় ছিল বা আদৌ ছিল কিনা তা যাচাই করার জন্য প্রথমে আমরা তাদের তাউংপিয়োলেতওয়েই বা নাগাখুইয়ার (Taungpyoletwei or Ngakhuya) মূল্যায়ন ক্যাম্পে পাঠাবো। এরপরই তাদের হ্লা পো খাউং আশ্রয়শিবিরে পাঠানো হবে’’ বলে জানান তিনি।
মিয়ানমারের সমাজকল্যাণ, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের পারমানেন্ট সেক্রেটারি সোয়ে আউং (Soe Aung) বলেন, ‘‘ফিরে আসাদের বাড়িঘর পুনর্নির্মাণ করার আগ পর্যন্ত তাদের ‘কমপক্ষে এক থেকে দু’মাস’ হ্লা পো খাউংয়ের অস্থায়ী শিবিরে থাকতে হবে। ’’
তবে কতো সংখ্যক রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে যোগ্য বলে বিবেচনা করা হবে তা এখনও স্পষ্ট করেনি মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ।
মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, মিয়ানমারের স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে উপযুক্ত প্রমাণ দিয়ে রোহিঙ্গা মুসলমানরা নাগরিকত্বের আবেদন করতে পারবে। অন্যথায় নয়।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৮
জেএম/