‘বিশ্ব-মোড়ল’ বলে একচ্ছত্র প্রভাব বিস্তারকারী সবচেয়ে বড় পরাশক্তি বলে বিবেচিত দেশটির প্রতিরক্ষা বিভাগ জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে পররাষ্ট্রনীতিতে কৌশলগত পরিবর্তন আনার কথা ভাবছে।
পেন্টাগনের কৌশলগত পরিকল্পনার নতুন নথিতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে মোকাবিলার চেয়ে রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে টেক্কা দেওয়াই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এখন বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
প্রায় দুই দশক ধরে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লড়াই অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু তাতে ফায়দা হয়েছে হাতেগোনা। কাজেই নতুন এই কৌশলটি মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনবে কি না তা নিয়েও যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। মার্কিন ভোটাররা নতুন কৌশলগত পরিকল্পনায় আস্থাবান হবে কি?—এ প্রশ্নটাও সামনে চলে আসছে।
প্রশ্নের উত্তর সম্ভবত ‘না’। গত এক বছরে করা কয়েকটি জরিপে দেখা গেছে, আমেরিকানরা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদকেই তাদের জন্য হুমকি মনে করে। এ নিয়ে তারা যতটা উদ্বিগ্ন থাকে, উদীয়মান সামরিক ও অর্থনৈতিক পরাশক্তি চীন বা চিরশত্রু রাশিয়াকে নিয়ে তারা ততটা চিন্তিত নন। এখানেই ভোটারদের সঙ্গে ক্যাপটল হিল কর্তাদের চিন্তা ও বিশ্বাসের ফারাক।
শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) সকালে নতুন এই প্রতিরক্ষা কৌশলের ঘোমটা খোলেন জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বিদ্যা স্কুলের পল এইচ নিৎসে।
প্রতিরক্ষাসচিব জিম ম্যাটিস উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করে বললেন, বর্তমান সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার কি কি হওয়া উচিত সেটাই নথিতে তুলে ধরা হয়েছে। ‘কৌশলগত খারাপ সময়’ থেকে বেরিয়ে আসতে এবং সামরিক বাহিনীতে সুসংহত করতে হলে দরকার অব্যাহত বিনিয়ো।
ম্যাটিস বলেন, আমরা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবো। কিন্তু এখন থেকে আমাদের আসল মনোযোগ সন্ত্রাসবাদের মোকাবেলার চেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী পরাশক্তিদের মোকাবেলা করা।
শিকাগো কাউন্সিলের তথ্যমতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসবাদের বিষয়ে উদ্বেগ মূলত একটি দ্বিপাক্ষিক ব্যাপার। এর বিপরীতে সংখ্যাগরিষ্ঠদের উদ্বেগ চীনের সামরিক শক্তি বা রাশিয়ার অঞ্চলগত উচ্চাকাঙ্ক্ষা।
পেন্টাগন জনমতের দ্বারা পরিচালিত নয়। বরং পরিচালিত বাস্তবতার দ্বারা। অনেকে দীর্ঘদিন ধরে যুক্তি দেখান যে, সন্ত্রাসবাদের ব্যাপারে পশ্চিমাদের প্রতিক্রিয়া সব সময়েই চরমে। কিন্তু একটি প্রকাশিত পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, ইসলামপন্থি সন্ত্রাসীদের তুলনায় আমেরিকানদের মৃত্যুর জন্য বেশি দায়ী লন মোয়ার (lawn mower) বা ঘাসকাটা যন্ত্র।
বাংলাদেশ সময়: ২২২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৮
এমএসএ/জেএম/