পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে পাকিস্তানের দ্য নেশন পত্রিকা এই মর্মে সোমবার এক প্রতিবেদন ছেপেছে।
দ্য নেশনের খবরে দাবি করা হয়, পাক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সূত্রে তারা জানতে পেরেছে পাকিস্তানের প্রতিবাদকে ওয়াশিংটন একদমই আমলে নেয়নি।
পাকিস্তানের প্রতি ওয়াশিংটনের কড়া বার্তাটি ছিল এরকম: ‘‘Pakistan would have to “earn” an end to such attacks – by taking action against all the militant outfits.’’
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা দ্য নেশনকে জানান, “পাকিস্তানি ভূখণ্ডের ভেতরে যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলা চালানোর ঘটনায় পাকিস্তানের জনগণ যে খুবই ক্ষুব্ধ সেকথা আমরা তাদের (যুক্তরাষ্ট্র) জানিয়েছি। আমরা তাদের এ-ও জানিয়েছি, পাকিস্তানের জনগণ চায় মার্কিন ড্রোন হামলার বিরুদ্ধে আমরা যেন পাল্টা সামরিক ব্যবস্থা নিই। কিন্তু তবু আমাদের কথায় এখন পর্যন্ত তারা কোনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ’’
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘‘তাদের (যুক্তরাষ্ট্র) বদ্ধমূল ধারণা, আমরা পাকিস্তানিরা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনের নামে ‘দ্বিমুখী খেলা’ খেলছি। তারা মনে করে কিছু জঙ্গি গোষ্ঠিকে আমরা আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের কাজে তারা মোটেই সন্তষ্ট নয়। তাদের দাবি, সত্যিকারভাবে জঙ্গি দমন করে তাদেরকে সন্তষ্ট করতে হবে। সন্তষ্ট না হওয়া পর্যন্ত তারা আমাদের দেশের ভেতরে (পাকিস্তানে) ড্রোন হামলা চালাতেই থাকবে। আমাদের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রকে সহজে সন্তষ্ট করতে পারা আদৌ সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। ’’
খুররম এজেন্সি নামের এলাকায় গত ২৫ জানুয়ারি মার্কিন ড্রোন হামলায় দুজনের মৃত্যুর পর পাকিস্তানজুড়ে এর কড়া প্রতিক্রিয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ‘‘পাকিস্তানের ভূখন্ডের ভেতরে আর একটিও ড্রোন হামলা যেন চালানো না হয়’’ এই মর্মে যুক্তরাষ্ট্রোকে কড়া বার্তা দিয়েছিল পাকিস্তান।
পাকিস্তান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই বার্তায় হিতে বিপরীতই হয়েছে পাকিস্তানের জন্য। ওয়াশিংটন সেকথাই বলে দিয়েছে ইসলামাবাদকে। যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে কড়া বার্তা দিয়েছে পাকিস্তানকে। তারা হাক্কানি নেটওয়ার্ক নামের একটি জঙ্গি গোষ্ঠীর নাম করে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছে ইসলামাবাদকে। তারা বলেছে, এর মধ্য দিয়ে পাকিস্তানকে ‘‘প্রমাণ করতে হবে’’ যে, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে সে আসলেই ‘‘আন্তরিক’’।
এ বিষয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে পাকিস্তানের সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও বর্তমানে প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক লে. জেনারেল নাঈম খালিদ লোধী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সকল আন্তর্জাতিক রীতিনীতি লঙ্ঘন করে পাকিস্তানের সার্বভৌম ভূখণ্ডের ভেতরে ড্রোন হামলা চালাচ্ছে। ড্রোন হামলার জবাব দেবার অধিকারও পাকিস্তানের রয়েছে। কেননা এ ধরনের হামলা পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বের প্রতি সরাসরি চ্যালেঞ্জ।
তিনি বলেন, ‘‘ যখন খুশি পাকিস্তানে ড্রোন হামলা করাটা মার্কিনিদের বদভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। একে আর সহ্য করা উচিত হবে না। ’’
বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৮
জেএম