বুধবার (১৮ এপ্রিল) প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে দেওয়া এক ভাষণে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, জরুরি ভিত্তিতে নির্বাহী প্রেসিডেন্সিতে (প্রেসিডেন্টশাসিত সরকার) যাওয়া উচিত আমাদের দেশের। তাই আগামী ২৪ জুন সংসদ ও প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
যদিও ভোটের তারিখ নির্ধারণে নির্বাচন কমিশনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা লাগবে, তথাপি এরদোগান জানান, ঘোষণা অনুযায়ী ক্ষমতাসীন দল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (একেপি) নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করবে।
অবশ্য সোমবারই (১৬ এপ্রিল) এমন ইঙ্গিত দেন একেপির ‘মিত্র’ ন্যাশনালিস্ট মুভমেন্ট পার্টির (এমএইচপি) নেতা দেলভেৎ বাচেলি। পরদিন মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) বাচেলির সঙ্গে বৈঠকের পর এরদোগান নির্বাচনের এ ঘোষণা দিলেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে কুর্দি বিদ্রোহীদের দমনে তুরস্কের অভিযানের কারণে দেশটিতে ‘জাতীয়তাবাদ’র হাওয়া বইছে। এই হাওয়ায় ভাসছেন ২০১৪ সাল থেকে প্রেসিডেন্ট পদে আসীন এরদোগান। সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে তিনি সরকারকে প্রেসিডেন্টশাসিত পদ্ধতিতে নিয়ে আসতে চাইছেন, যাতে রাষ্ট্র চালানোর সব ক্ষমতাই ফের চলে আসে সংসদশাসিত সরকারে ২০০৩ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করা এরদোগানের হাতে।
এরদোগান বলেন, সিরিয়া ও ইরাক সীমান্তের কুর্দি বিদ্রোহীদের দমনসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নতুন পদ্ধতি (প্রেসিডেন্টশাসিত সরকার) জরুরি ভিত্তিতে বাস্তবায়ন দরকার।
নির্ধারিত মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন শেষ করার পর এরদোগান প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন করে ২০১৪ সালের আগস্ট থেকে অধিষ্ঠিত আছেন। দীর্ঘদিন ধরে প্রেসিডেন্ট পদটি ‘কেবল আনুষ্ঠানিক’ থাকলেও এরদোগান তার হাতে ক্ষমতা বাগাতে গত এপ্রিলে গণভোট আয়োজন করেন। সে ভোটে জিতে অনেক নির্বাহী ক্ষমতাই হস্তগত করেন তিনি। যার মধ্যে ভাইস প্রেসিডেন্ট, মন্ত্রী, উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা ও জ্যেষ্ঠ বিচারপতি নিয়োগের ক্ষমতা উল্লেখযোগ্য।
কিন্তু এরদোগান চাইছেন, ক্ষমতা পুরোপুরি নিজের হাতেই নিয়ে আসতে। সমমনা এমএইচপির সঙ্গে আলোচনা ও এরদোগানের ঘোষণা অনুযায়ী, নির্বাচনে ক্ষমতাসীন একেপি বিজয়ী হলে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতির বড় প্রভাবক দেশটিতে সংসদশাসিত সরকার ব্যবস্থা থেকে প্রেসিডেন্টশাসিত সরকার ব্যবস্থা চালু হবে। আর এটা প্রেসিডেন্টশাসিত না হয়ে পশ্চিমাদের কাছে বিবেচিত হবে ‘এরদোগানশাসিত’ সরকার হিসেবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৮
এইচএ/