শুক্রবার (৬ জুলাই) থেকে চীনের ৩৪০০ কোটি ডলার মূল্যের পণ্য আমদানিতে যুক্তরাষ্ট্র ওই শুল্ক আরোপের পর চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লু ক্যাং এক বিবৃতিতে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র নতুন শুল্ক বসিয়েছে, আমাদের পাল্টা পদক্ষেপও অবিলম্বে কার্যকর হবে। ’ তবে কী ধরনের পণ্য বা কতো অর্থমূল্যের পণ্য এই শুল্কের আওতায় পড়বে তা নিশ্চিত করেননি তিনি।
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের এই শুল্কারোপের ঘোষণার পরই চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘যুক্তরাষ্ট্র ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু করেছে। পাল্টা লড়াইয়ে নামা ছাড়া চীনের কোনো উপায় নেই। ’
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) বাণিজ্য-নীতিও যুক্তরাষ্ট্র লঙ্ঘন করেছে অভিযোগ তুলে বেইজিংয়ের তরফ থেকে বলা হয়, ‘ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপ ডব্লিউটিও’র নীতির লঙ্ঘন এবং তাদের ‘গৎবাঁধা বাণিজ্যিক মাস্তানির’ উদাহরণ। এটা বৈশ্বিক শিল্পখাতের নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগজনক হুমকি। এর কারণে বৈশ্বিক বাণিজ্যিক কার্যক্রম ব্যাহত হবে এবং বহুজাতিক বিশ্ববাজারকে অস্থিরতার মধ্যে ফেলবে। ’
যুক্তরাষ্ট্র তাদের ‘স্বদেশি কোম্পানি ও নাগরিকদের স্বার্থে’ এই শুল্কারোপ করলেও চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ‘এতে কেবল প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়ার পরিস্থিতি তৈরি হবে এবং তাদের নিজেদের জন্যই ক্ষতিকর হবে। ’
‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ স্লোগানে বিশ্বাসী ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ‘কট্টর জাতীয়তাবাদ’ এবং সবকিছু থেকে সরে আসার নীতি (আইসোলেশনিজম ও উইথড্রয়াল) দেখিয়ে আসছেন। তারই অংশ হিসেবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ‘শিল্পখাত রক্ষায়’ চীনের পণ্যে এই শুল্কারোপের উদ্যোগ নেন।
এর ফলে সৃষ্ট বাণিজ্য যুদ্ধ পরিস্থিতি এড়াতে ওয়াশিংটন-বেইজিংয়ের কর্তারা অনেক আলাপ-আলোচনা করলেও শেষ পর্যন্ত তা এড়ানো গেলো না। সব কিছু পাশ কাটিয়ে ট্রাম্প সম্প্রতি চীনের ৩৪০০ কোটি ডলার মূল্যের ৮১৮ পণ্য আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে হুমকি দিয়ে বলা হচ্ছে, এটা কেবল প্রথম ধাপ, পর্যায়ক্রমে চীনের ৪৫ হাজার কোটি ডলার মূল্যের পণ্যে আমদানি শুল্ক আরোপ করা হবে। কিন্তু প্রথম ধাপেই যুক্তরাষ্ট্রকে চীন পাল্টা জবাব দিয়ে দেওয়ায় তাদের পরবর্তী হুমকি নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়ছে বিশ্ববাজারে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৬ ঘণ্টা, জুলাই ০৬, ২০১৮
এএইচ/এইচএ/