এভাবেই নিজের যৌন সহিংসতার শিকার হওয়ার কথা বর্ণনা করেছেন উত্তর কোরিয়ার এক নারী। যিনি ধর্ষণের শিকার হয়েও কোনো বিচার পাননি।
বৃহস্পতিবার (১ নভেম্বর) উত্তর কোরিয়ার নারীদের উপর চালানো এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়ায় ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতন যেনো খুব সাধারণ ঘটনা হিসেবে মনে করা হয়। আর এ কারণে দেশটিতে অহরহ ঘটে চলেছে নারীদের যৌন সহিংস আচরণ।
সিএনএন বলছে, উত্তর কোরিয়ায় ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা নারীদের ওপর প্রায় দুই বছর ধরে এ গবেষণা চালিয়েছে এইচআরডব্লিউ।
গবেষণায় দেখা গেছে, পুলিশ থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা কর্মকর্তা, কারারক্ষী এমনকি মার্কেটের তত্ত্বাবধায়কের মাধ্যমেও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন নারীরা। এর মধ্যে সাধারণ নারী যেমন রয়েছেন তেমনই আছেন কর্মজীবী নারীও। উত্তর কোরিয়ায় ভার্চুয়ালিও নারীকে খেলনা হিসেবে হেনস্থার শিকার হতে হয়।
প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কেনেথ রোথ বলেন, অবস্থা দৃষ্টে গবেষণায় উঠে এসেছে যে, উত্তর কোরিয়ায় যৌন নির্যাতন একটা সাধারণ ঘটনা। এটাকে জীবনের অন্যান্য সাধারণ ঘটনা হিসেবেই মেনে নিচ্ছেন নারীরা।
‘‘দেশটিতে যৌন সহিংসতা ‘একটি উন্মুক্ত, বিবেচনাহীন এবং প্রচণ্ড গোপনীয় সহনশীল’ একটা বিষয় হয়ে গেছে। দেশটির নারীরা সম্ভবত ‘মি-টু’ আন্দোলনে যুক্ত হতেন যদি তাদের ন্যায়বিচার পাওয়ার কোনো সুযোগ থাকতো। কিন্তু উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উনের একনায়কতন্ত্রের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস না। ’’
যৌন হেনস্থার শিকার দেশটির সাবেক এক নারী পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আমাদের দেশের ৯০ শতাংশ নারীই কোনো না কোনোভাবে ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতার শিকার।
ভুক্তভোগী নারীদের উদ্ধুতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যৌন সহিংসতার শিকার নারীরা তাদের দেশের পুলিশ ও প্রশাসনকেও বিশ্বাস করেন না। নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রশাসন কিংবা পুলিশের কাছে গেলে সেখানে আবার তাদের হয়রানি করা হয়।
এমনকি বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে আবারও ধর্ষণ করার মতোও ঘটনা ঘটেছে। তাই শত অন্যায় অবিচারের মধ্যে গেলেও পুলিশ বা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেন না নির্যাতনের শিকার উত্তর কোরীয় কোনো নারী।
বাংলাদেশ সময়: ০৬৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০১৮
এপি/এমএ