ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

জিনজিয়াংয়ে ১৬ হাজার মসজিদ ধ্বংসের অভিযোগ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২০
জিনজিয়াংয়ে ১৬ হাজার মসজিদ ধ্বংসের অভিযোগ সংগৃহীত ছবি

অস্ট্রেলিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইন্সটিটিউটের (এএসপিআই) আন্তর্জাতিক সাইবার পলিসি সেন্টার চীনের জিনজিয়াংয়ের কারাগার এবং অঞ্চলটিতে মসজিদ ও উইগুর মুসলিমদের সাংস্কৃতিক স্থাপনা ধ্বংসের বিষয়ে দুটি নতুন গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

পাশাপাশি এএসপিআই-এর আন্তর্জাতিক সাইবার পলিসি সেন্টার জিনজিয়াং ডেটা প্রকল্পের একটি ওয়েবসাইটও চালু করেছে।

এএসপিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীন সরকার ২০১৭ সাল থেকে জিনজিয়াংয়ে প্রায় ১৬ হাজার মসজিদ সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে ভেঙে ফেলেছে।

২০১৭ সাল থেকে চীনের সুদূর পশ্চিমাঞ্চলে উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল যা জিনজিয়াং হিসেবে পরিচিত, সেখানে লাখ লাখ উইগুর এবং অন্যান্য তুর্কি ও মুসলিম সংখ্যালঘুদের বিচারবহির্ভূতভাবে আটক করে রেখেছে চীন সরকার। অঞ্চলটিতে উইগুর মুসলিম সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক স্থাপনার পাশাপাশি মসজিদগুলি ভেঙে ফেলার বিষয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।

২০১৭ সালের পর থেকে জিনজিয়াংয়ের আটক ব্যবস্থাপনার নির্ভরযোগ্য ডেটা খুব দুর্লভ হয়ে পড়ে। তবে এএসপিআইয়ের আন্তর্জাতিক সাইবার পলিসি সেন্টারের গবেষকরা জিনজিয়াংয়ে ৩৮০টি ডিটেনশন সেন্টার শনাক্ত করেছেন এবং সেগুলো ম্যাপ তৈরি করে বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন। এটিই এখন জিনজিয়াংয়ের আটক ব্যবস্থাপনার ওপর সর্বাধিক বিস্তৃত তথ্যে পরিণত হয়েছে।

এএসপিআইয়ের নতুন ডাটাবেসটি ‘পুনঃশিক্ষা’ শিবির, ডিটেনশন সেন্টার ও কারাগারগুলির বিষয়ে গবেষণায় জানিয়েছে যে, সেগুলো ২০১৩ সাল থেকে নতুনভাবে নির্মিত বা প্রসারিত হয়েছে। এএসপিআইয়ের আন্তর্জাতিক সাইবার পলিসি সেন্টারের গবেষকরা জিনজিয়াংয়ের আটককেন্দ্রগুলোর বেশিরভাগের তথ্য উপস্থাপন করতে বর্তমানে সক্ষম।

এই গবেষণার অনুসন্ধানগুলি চীনা কর্মকর্তাদের দাবির সম্পূর্ণ বিপরীত। তাদের দাবি পুনঃশিক্ষা শিবিরে থাকা ব্যক্তিরা ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে সেখান থেকে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেছে। কিন্তু স্যাটেলাইট চিত্রের তথ্য প্রমাণ করে আটক স্থাপনাগুলি সদ্য নির্মিত যা ২০১৯ এবং ২০২০ সাল জুড়ে নির্মিত হয়েছে।

গবেষণার দ্বিতীয় অংশটি জিনজিয়াংয়ের সাংস্কৃতিক স্থাপনার ধ্বংসের হার তদন্তকারী একটি প্রকল্প। এই গবেষণায় বলা হয়, অঞ্চলটিতে ৩৫ শতাংশ মসজিদ ভেঙে ফেলা হয়েছে এবং আরও ৩০ শতাংশ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাধারণত গম্বুজ, মিনার এবং মসজিদের গেট যেখানে ইসলামিক বা আরব স্থাপত্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে সেগুলো অপসারণ করা হয়েছে। গবেষকদের ধারণা জিনজিয়াং জুড়ে প্রায় ১৬ হাজার মসজিদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বা সম্পূর্ণ ধ্বংস করা হয়েছে, যা মোট মসজিদের ৬৫ শতাংশ। ধ্বংস হওয়া স্থাপনাগুলি পরিত্যক্ত স্থান হিসেবে পড়ে রয়েছে।

২০১৭ সাল থেকে দক্ষিণ জিনজিয়াংয়ের গুরুত্বপূর্ণ ইসলামিক সাংস্কৃতিক স্থাপনাগুলির (মসজিদ, কবরস্থান) ৩০ শতাংশ ধ্বংস করা হয়েছে, ২৮ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বা কোনভাবে সেগুলিকে পরিবর্তন করা হয়েছে। এর মধ্যে ওরডাম মাজারের তীর্থস্থানীয় শহরটিকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে চীন সরকার।

তবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এএসপিআইয়ের ওই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলন করেছে। সংবাদ সম্মেলনে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, ওই প্রতিবেদন গুজব ছাড়া আর কিছুই না। এএসপিআই বিদেশ থেকে তহবিল পেতে এই মিথ্যাকে সমর্থন করছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২০
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।