নয়াদিল্লি: ভারতীয় মুদ্রা রুপীর একটি সর্বসম্মত প্রতীক নির্ধারণে আজ বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসেছে দেশটির কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা। এরইমধ্যে সর্বভারতীয় এক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সেরা পাঁচটি নকশা বাছাই করা হয়েছে।
এর ফলে ভারতীয় মুদ্রা বিশ্বের শীর্ষ পর্যায়ের অর্থনৈতিক শক্তিগুলোর মুদ্রা যেমন মার্কিন ডলার, ব্রিটিশ পাউন্ড, জাপানি ইয়েন বা ইউরোপিয় ইউনিয়নের ইউরো’র মত নির্দিষ্ট একটি প্রতীক পেতে যাচ্ছে।
গতবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জী বলেছিলেন, আগামী বছরের মধ্যে আমরা ভারতীয় রূপীর একটি প্রতীক নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি যা ভারতীয় সংস্কৃতি ও মূল্যবোধকে তুলে ধরবে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায়, এযাবত ভারতীয় মুদ্রার কোনও স্বীকৃত প্রতীক বা চিহ্ন ছিল না। এতদিন বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইরেজি ‘জং’ বা হিন্দি ‘রু’ দিয়ে ভারতীয় রূপীকে চিহ্নিতকরনের কাজটি হয়ে এসেছে। তবে তার কোনওটিই সরকারিভাবে স্বীকৃত নয়। এনডিটিভি জানায়, চূড়ান্তভাবে বাছাই করা পাঁচটি প্রতীকেই রূপীকে তুলে ধরা হয়েছে হিন্দিতে রূপীর আদ্যাক্ষর ‘র’ বর্ণটির সঙ্গে দু’টি আড়াআড়ি দাগের মাধ্যমে।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো জনিয়েছে চূড়ান্ত বাছাই করা প্রতীকটির শিল্পী আড়াই লক্ষ রূপী সম্মানি পাবেন। তবে এর বিনিময়ে তার নকশার স্বত্ত্বটি ভারত সরকারকে দিয়ে দিতে হবে।
ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয় ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে এই নকশা প্রতিযোগিতার ঘোষণা দেওয়ার পর ভারত ছাড়াও বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ভারতীয়দের মঝে তা ব্যাপক সারা ফেলে। ভারতীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, নির্বাচিত প্রতীকে ভারতীয় ইতিহাস, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের ছাপ থাকবে।
অপরদিকে ভারত ছাড়াও পাকিস্তান, শ্রীলংকা ও নেপালের মুদ্রার নামও রূপী। তাই শুধুমাত্র একটি বর্ণের মাধ্যমে ভরতীয় মুদ্রা রূপীর জন্য একটি স্বতন্ত্র, বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত আলাদা চিহ্ন তৈরি করা যে কারো জন্যই একটু কঠিনই।
এর আগে ১৯৯০ সালে রাশিয়াও তার মুদ্রা রুবলের জন্য একক একটি প্রতীক নির্ধারণের উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত রুবলের কোনও পছন্দনীয় প্রতীক তারা খুঁজে পায়নি। কারণ ভারত-রাশিয়ার মত কোনও দেশের মুদ্রার প্রতীক তৈরির কাজটি বিভিন্ন দিক বিবেচনায় বেশ জটিলই। এব্যাপারে বলতে গিয়ে ভারতের একটি শীর্ষ বিজ্ঞাপনী সংস্থায় কর্মরত এক নকশাবিদ ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসকে বলেন, এই প্রতীক ব্যবহৃত হবে বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার ওয়েবসাইট, মোবাইল অপারেটর, ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠান, শেয়ারবাজারসহ আরো অনেক ক্ষেত্রে। কম্পিউটারের বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশনে এর ব্যবহারও হতে হবে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ফলে এ কাজে প্রচুর পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রয়োজন পড়ে। আর তাই কাজটি বেশ কঠিনই।
বাংলাদেশ সময় ০৪:১০, জুন ২৪, ২০১০
/একে