মাদারীপুর: মাদারীপুরে তালাবদ্ধ ঘরে আগুনে পুড়ে দুই সহোদর শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন মা পূর্ণিমা বৈদ্য।
বুধবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে মাদারীপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩য় আদালতের বিচারক মো. সাজিদ উল হাসান চৌধুরী এই জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
পারিবারিক কলহের জেরে সহোদর দুইভাইকে ঘরের ভেতরে রেখে তালা মেরে আগুন ধরিয়ে দেন বলে জবানবন্দি দেন পূর্ণিমা বৈদ্য।
স্বামী কারাগার থেকে বের হলে আরেকটি বিয়ে করবেন বলে হুমকি দিতেন পূর্ণিমাকে। সেই হুমকি পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে এক সময় ঘরে আগুন ধরিয়ে এই হত্যাকাণ্ডের সিদ্ধান্ত নেন পূর্ণিমা।
জবানবন্দির পর আদালত পূর্ণিমাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
জানা গেছে, ৬ মাস আগে উত্তর ঝিকরহাটি গ্রামের গোলাম মাওলা মাতুব্বরের ঘর ভাড়া নেন সদর উপজেলার শিরখাঁড়া ইউনিয়নের শ্রীনদী এলাকার ভ্যানচালক মানিক বৈদ্য। শাশুড়ি, স্ত্রী ও দুই ছেলে নিয়ে সেখানে থাকতেন তিনি। তার স্ত্রী পূর্ণিমার বাবার বাড়ি বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার হারতাবাজার এলাকায়।
প্রতিবেশীরা জানান, পারিবারিক কলহের জেরে প্রায়ই স্ত্রীকে মারধর করতেন মানিক। একটি মামলায় দুইমাস ধরে কারাগারে রয়েছেন তিনি।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ার হোসেন চৌধুরী জানান, সোমবার দুপুরে সদর উপজেলার উত্তর ঝিকরহাটি গ্রামের গোলাম মাওলা মাতুব্বরের ভাড়াকৃত টিনশেট ঘরে আগুনে পুড়ে মারা যায় দুই সহোদর শিশু রুদ্র (০১) ও মানব (০৩)। একটি মামলায় দুইমাস ধরে বাবা কারাগারে থাকলেও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর শিশু দুটির মা পূর্ণিমা ও সাথে থাকা নানী রেবা রানী বৈদ্য পালিয়ে যান।
তিনি আরও বলেন, নিহত শিশুদের দাদা কালী দাস বৈদ্য বাদী হয়ে পূর্ণিমা ও তার মা রেবা রানী বৈদ্যকে আসামি করে এই ঘটনায় সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তদন্তে নামে পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর কাকরাইল থেকে গ্রেফতার করা হয় পূর্ণিমাকে।
বাংলাদেশ সময়ঃ ২০০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০২২
কেআই/এসএএইচ