লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে রামগঞ্জে তাহমিনা আক্তার (২৪) নামে এক নারীর সঙ্গে চাচাতো ভাসুরের শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে দেখে ফেলায় খুন করা হয়েছে মেয়েটির শাশুড়ি রাহেমা বেগমকে (৬৫)। এ ঘটনায় করা মামলায় তাহমিনা ও তার প্রেমিক জসিম উদ্দিনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমাবার (১৯ জুন) দুপুরে জেলা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।
রায়ের সময় জসিম উদ্দিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তবে তাহমিনা অনেক আগেই জামিন নিয়ে আত্মগোপন করেছেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত জসিম উদ্দিন বাঘবপুর গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে। আর তাহমিনা সাউদেরখিল গ্রামের মফিজুল ইসলামের মেয়ে।
আদালত ও মামলা সূত্রে জানা যায়, রাঘবপুর গ্রামের মসজিদ ওয়ালা নোয়াবাড়ির মো. আবু তাহেরের দুবাই প্রবাসী ছেলে কবির হোসেনের সঙ্গে পারিবারিকভাবে তাহমিনা আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর কবির তার স্ত্রীকে বাড়িতে রেখে দুবাই চলে যান। কবিরের বাবা আবু তাহের ব্যবসার জন্য ঢাকাতে থাকতেন। বাড়িতে তাহমিনা এবং তার শাশুড়ি রাহেমা বেগম বসবাস করতেন। এ সুযোগে চাচাতো ভাসুর জসিমের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন তাহমিনা। ২০২১ সালের ২২ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে তাহমিনা ও জসিম দুইবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। বিষয়টি দেখে ফেলায় তারা দুজন মিলে রাহেমা বেগমকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। এসময় রাহেমার মুখে বালিশ চাপা দেন জসিম আর তাহমিনা দুই পা চেপে ধরেন। এতে রাহেমার মৃত্যু হয়। ঘটনার পর জসিম পালিয়ে যান। তাহমিনা ভেতর থেকে ঘরের দরজা বন্ধ করে রাখেন।
প্রতিবেশীরা ঘটনাটি টের পেয়ে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে এবং তাহমিনাকে আটক করে। এ ঘটনায় তাহমিনার শ্বশুর মো. আবু তাহের (৭৭) বাদী হয়ে তাহমিনাকে আসামি করে রামগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
তাহমিনা ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। তিনি এ হত্যায় জসিম জড়িত বলে জানান। পরে ২৭ এপ্রিল পুলিশ জসিমকেও গ্রেপ্তার করে।
হত্যা মামলাটি তদন্ত করে তাহমিনা ও জসিমের নামে ২০২২ সালের ২৭ এপ্রিল আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন রামগঞ্জ থানার সেই সময়ের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আবদুল বারী মৃধা।
সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় সোমবার এ রায় দেন আদালত।
জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৩ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২৩
এসআই