ঢাকা, বুধবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

তারেক-জোবায়দা আইনের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করেছেন: দুদক আইনজীবী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২৩
তারেক-জোবায়দা আইনের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করেছেন: দুদক আইনজীবী দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কৌঁসুলি মোশাররফ হোসেন কাজল

ঢাকা: সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় বিচার চলার সময় অনুপস্থিত থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবায়দা রহমান আইনের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কৌঁসুলি মোশাররফ হোসেন কাজল।  

বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) মামলার শুনানি শেষে সাংবাদিকদের কাছে তিনি  এ মন্তব্য করেন।

এদিন দুদকের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. আছাদুজ্জামান এ মামলার রায় ঘোষণার জন্য আগামী ২ আগস্ট দিন ধার্য করেন।  

মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, সম্পদ বিবরণী দাখিলের পর তারা আর আইনের আশ্রয় গ্রহণ করেননি। জনগণ এবং দেশ ও জাতি কেউ এটি আশা করেনি। কারণ তার উচিত ছিল আদালতে উপস্থিত হয়ে এ মামলাটিকে ফেস (মোকাবিলা) করা এবং আইনের আশ্রয় নেওয়া।  

তিনি আরও বলেন, তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা দেওয়া হয়েছে, তাকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে, তাকে উপস্থিত হওয়ার জন্য বলা হয়েছে এবং তার জন্য গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। তারপর থেকে তাদের আইনজীবীরা তাদের অবর্তমানে তাদেরকে আইনি সাহায্য করেছেন। আমরা মনে করি যেহেতু তারা সবকিছু জানেন, সম্পদ বিবরণী ঘোষণা করেছেন এবং তাদের পক্ষ থেকে আইনজীবীরা পর্যন্ত আইনের আশ্রয় নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। তারপরও তারা আদালতে উপস্থিত হননি। সুতরাং এই যে আদালতের প্রতি এবং আইনের প্রতি তাদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন না করা, আমরা মনে করি এটি তারা সঠিক কাজ করেননি।

মামলার তদন্ত ও বিচারে দুদক নিরপেক্ষতার সঙ্গে কাজ করেছে উল্লেখ করে মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন অত্যন্ত নিরপেক্ষভাবে মামলাটি তদন্ত করেছে। মামলাটি শুরু হয়েছে ৪ কোটি ২৩ লাখ টাকা দিয়ে কিন্তু পরবর্তীতে সব পর্যালোচনা করে সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে ১৮টি এক্সিবিটের (কাগজপত্র প্রদর্শনী) মাধ্যমে আমরা প্রমাণ করতে পেরেছি, তারেক রহমান ২ কোটি ২৩ লাখ টাকা অবৈধ উপার্জন এবং ৫৮ লাখ টাকার তথ্য গোপন করেছেন।  

দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী থেকে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আমরা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭ (১) তারেক রহমানের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে ২ কোটি ২৩ লক্ষ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ৫৮ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ এবং ওই অপরাধে সহায়তার জন্য দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে ৪২ জন সাক্ষী উপস্থাপন করেছি। সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আমরা এ অপরাধ প্রমাণ করতে পেরেছি এবং তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছি।  

এর আগে গত ২৪ জুলাই এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। ওইদিন সবশেষ সাক্ষ্য দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের তৎকালীন উপ-পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম। এরপর যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়। মামলাটিতে মোট ৫৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।  

গত ১৩ এপ্রিল এ মামলায় তাদের বিরুদ্ধে চার্জগঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন একই আদালত। এরপর গত ২১ মে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়৷ ওইদিন আদালতে জবানবন্দি দেন মামলার বাদী দুদকের উপ-পরিচালক ড. মোহাম্মদ জহুরুল হুদা।  

২০০৮ সালে তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এরপরই মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন জোবায়দা। ওই বছরই এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে আপিল করলে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন।  

গত বছর এ মামলার স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে রুল খারিজ করেন হাইকোর্ট।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২৩
কেআই/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।