ঢাকা: কোনো আইনজীবীর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ (যৌন হয়রানির) যদি আসে তাহলে তিনি কিন্তু আর এ পেশায় থাকতে পারবেন না। কারণ তাকে আর কেউ বিশ্বাস করবে না।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) সুপ্রিম কোর্টস্থ ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের (এলআরএফ) কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন এ কথা বলেন।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে হাইকোর্ট বিভাগের দেওয়া রায়ের আলোকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি এ সভার আয়োজন করে।
সভার প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, কোনো নীতিমালা না হওয়া পর্যন্ত এটিকে (রায়) আইন হিসেবে মেনে চলতে হবে। তাই এটি (রায়) মেনে চলা আমাদের জন্য আবশ্যিক। তবে সুপ্রিম কোর্টে এমন কোনো ঘটনা (যৌন হয়রানি) ঘটতে পারে বলে আমরা বিশ্বাস করি না। এখন পর্যন্ত এমন কোনো অভিযোগ পাইনি। হয়তো ভবিষ্যতে কি হবে, তা জানি না। কমিটি (যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি) দায়িত্ব নিয়েছে, তারা বিষয়টি দেখবে। বারের (সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি) গত কমিটি এ উদ্যোগ নিয়েছে, বর্তমান কমিটি তার ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে। এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। প্রতিটি কাজের ধারাবাহিকতা থাকা উচিত।
অ্যাটর্নি জেনারেল আইনজীবীদের সতর্ক করে বলেন, আমরা বিশ্বাস করি এখানে আমরা সবাই বন্ধুর মতো কাজ করি। নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে আমরা সবাই সচেতন। আরেকটা কথা বলে রাখি, কোনো আইনজীবীর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ (যৌন হয়রানির) যদি আসে তাহলে তিনি কিন্তু আর এ পেশায় থাকতে পারবেন না। কারণ তাকে আর কেউ বিশ্বাস করবে না। তাকে হেয় হতে হবে। ফলে কাজ (আইন পেশা) করাটা তার জন্য দুরূহ হয়ে যাবে। এ কথা মাথায় রেখে আমার মনে হয় না এখনো এ ধরনের কোনো অভিযোগ এখানে এসেছে। কারণ আইনজীবীরা অনেক সচেতন। এখানে বোনেরা যেমন কাজ করেন তেমনি ভাইয়েরাও কাজ করেন। সবাই আমরা পারস্পরিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখেই আমরা কাজ করি। তাই আশা করছি, এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না।
‘তবে ভবিষ্যতে যদি কখনো এমন অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে আপনারা (যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটির সদস্যরা) সচেতনভাবে বিষয়টি তদন্ত করবেন এবং রায়ের আলোকে যদি কারো বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে অবশ্যই সমিতি এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। কারো কাজের ক্ষেত্রে আমরা এগিয়ে না এলে সমাজ এগিয়ে যাবে না। তাই কারো চলার পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা যাবে না। এ ধরনের কাজ (যৌন হয়রানি) হচ্ছে মানুষের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা, কাজকে নিরুৎসাহিত করা। ’
অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ্ মঞ্জুরুল হকসহ সমিতির বর্তমান ও সাবেক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
পরে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়। কমিটির সভাপতি হলেন অ্যাডভোকেট জেসমিন সুলতানা। আর কমিটির নয় সদস্যের মধ্যে আছেন- অ্যাডভোকেট রমজান আলী সিকদার, অ্যাডভোকেট রেহানা সুলতানা, ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ ফারুক, অ্যাডভোকেট আঞ্জুমান আরা রানু, ব্যারিস্টার হারুন-অর-রশিদ, অ্যাডভোকেট নিঘাত সীমা (বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি), অ্যাডভোকেট মাহবুবা আক্তার (বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড সার্ভিসেস ট্রাস্ট), অ্যাডভোকেট শবনম মোস্তারী এবং অ্যাডভোকেট মাহমুদা আফরোজ মনি।
বাংলাদেশ সময়: ২২৩৭ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২৪
ইএস/আরআইএস