ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

ফরিদপুরে ৬৮ আসামির জামিন নামঞ্জুর, ৩ জনের রিমান্ড

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট   | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০২৪
ফরিদপুরে ৬৮ আসামির জামিন নামঞ্জুর, ৩ জনের রিমান্ড

ফরিদপুর: ফরিদপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের করা ৪টি মামলায় গ্রেপ্তার ৬৮ আসামির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

রোববার (২৮ জুলাই) দুপুরে ফরিদপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনের ভাঙ্গা, সদরপুর ও সদর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পৃথকভাবে এসব মামলার শুনানি হয়।

এ সময় একটি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩ আসামির একদিনের করে রিমান্ড আবেদন মঞ্জুরের আদেশ দেওয়া হয়।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, সদরপুর সরকারি কলেজ এলাকায় পুলিশের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় ১৮ জুলাই দায়েরকৃত পুলিশের মামলায় ১১ আসামিকে সদরপুরের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গৌর চন্দ্র সাহার আদালতে হাজির করা হয়। তাদের আইনজীবীরা এ সময় জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করা হয়। একইসঙ্গে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। বিকেলে এ মামলায় আটক মাসুদ রানা, সজিব ও নিশাত নামে তিনজন আসামিকে একদিনের করে রিমান্ড মঞ্জুরের কথা জানানো হয়।

অন্যদিকে, ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানা পুলিশের করা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া ২৭ আসামির জামিন আবেদন করা হয়। সদর আদালতের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুজ্জামান জামিন আবেদন না মঞ্জুরের আদেশ দেন এবং ভাঙ্গা থানা পুলিশের করা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া ৩০ জনের মতো আসামি জামিনের আবেদন করলে ভাঙ্গা আদালতের বিচারক মো. নাছিম তাদেরও জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ফরিদপুরের তিনটি থানায় এ পর্যন্ত চারটি মামলা করা হয়। এর মধ্যে কোতোয়ালি ও ভাঙ্গা থানায় একটি করে এবং সদরপুর থানায় দুটি মামলা হয়েছে। ভাঙ্গা থানার মামলায় ২৫০ থেকে ৩০০ এবং অন্য দুটি মামলায় অজ্ঞাতনামা ‘আরও অনেকে’ উল্লেখ করা হয়েছে। কোতোয়ালি থানার মামলায় আটকদের মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফরিদপুরের দুই সমন্বয়ক শাহ মো. আরাফাত ও জনি বিশ্বাস ছাড়াও জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হাসান কায়েস ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী শিবলীও রয়েছেন।

এর সত্যতা নিশ্চিত করে মামলার আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এ. আর. লিটন জানান, ফরিদপুরের তিনটি থানায় পুলিশের করা চারটি মামলায় ৬৮ আসামির জামিন আবেদন করেন তারা। আদালত সবকটি জামিন আবেদনই নামঞ্জুর করেছেন।  

তিনি জানান, রোববার এসব মামলার কোনো ধার্য তারিখ ছিল না। তারা পৃথকভাবে এসব আদালতে জামিন প্রার্থনা করেন। এর মধ্যে সদরপুরের মামলায় ১১ জনকে আদালতে হাজির করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত ৩ আসামির একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুরের আদেশ দেন।

এদিকে, গ্রেপ্তারদের জামিন আবেদন উপলক্ষে জেলার কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম নেতা আবরার নাদিম ইতুসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মী ও গ্রেপ্তারদের স্বজন এবং অনেক শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন আদালত প্রাঙ্গণে।  

জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হাসান কায়েসের বড় ভাই মারুফ মিয়া বলেন, তার ছোট ভাই কায়েসকে শহরের আলীপুরের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় গত বুধবার রাত ১টা ৪০ মিনিটের দিকে। কোতোয়ালি থানার একজন এসআই এবং ডিবি পুলিশের একটি দল গত বুধবার রাত ১টা ৪০ মিনিটের দিকে আলীপুরের বাসা থেকে কায়েসকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।

ফরিদপুরের কোটা আন্দোলনের সমন্বয়ক গ্রেপ্তার হওয়া শাহ মো. আরাফাতের মা ময়না বেগম বলেন, ছাত্ররা তো একটি যৌক্তিক আন্দোলনে মাঠে নেমেছে। সরকার তাদের আন্দোলনের দাবি মেনে নেওয়ার পরে ছাত্ররা তো কোন আন্দোলন বা কর্মসূচিতে যায়নি। তারা সরকারের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে ঘরে ফিরেছিল। পরে কিছু দুর্বৃত্তরা দেশের সম্পদ নষ্ট করেছে। এখন সরকার ছাত্রদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। এর প্রভাব তাদের ছাত্রজীবনে পড়ছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০২৪
জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।