ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

বিচারপতি অপসারণের রিভিউ শুনানি ভ্যাকেশনের পর

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০২৪
বিচারপতি অপসারণের রিভিউ শুনানি ভ্যাকেশনের পর

ঢাকা: বিচারপতিদের অপসারণে সংসদের হাতে ক্ষমতা দিয়ে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ করে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) শুনানি হবে সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালীন ছুটির পর।  

রিটকারীর পক্ষে শুনানির জন্য আবেদনের পর বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) প্রধান বিচারপতির সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো.আসাদুজ্জামান। বিবাদী পক্ষে (রিট আবেদনকারী) ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

পরে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, সরকারের রিভিউ দীর্ঘদিন শুনানি হয় নাই। এখন নতুন প্রেক্ষাপটে প্রধান বিচারপতি নব নিযুক্ত হয়েছেন। অন্যান্য বিচারকরা নতুন নিয়োগ পেয়েছেন, সেজন্য আমি এটা মেনশন করেছি। অ্যাটর্নি জেনারেল বললেন ওনাদের একটু ইনস্ট্রাকশন দরকার আছে। উনিও নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত। তখন কোর্ট বললেন, এটা শুনবেন। তবে সেটা ওয়ান উইক আফটার ভ্যাকেশন। (সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালীন ছুটির এক সপ্তাহ পর)। অর্থাৎ ভ্যাকেশনের এক সপ্তাহ পর শুনানি হবে। সেপ্টেম্বর থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালীন ছুটি।

১৯৭২ সালে প্রণীত মূল সংবিধানে উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের কাছে ছিল। ১৯৭৫ সালের ২৪ জানুয়ারি সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে এ ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে অর্পণ করা হয়। পরে জিয়াউর রহমানের শাসনামলে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা দেওয়া হয় সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের কাছে। মার্শাল প্রক্লেমেশনে করা পঞ্চম সংশোধনীতে এক্ষেত্রে ৯৬ অনুচ্ছেদে পরিবর্তন আনা হয়েছিল।

২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ষোড়শ সংশোধনীতে সেটা বাতিল করে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া হয় সংসদকে। বিলটি পাসের পর একই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর তা গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়।

সংবিধানের এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরের ৫ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের নয় আইনজীবী হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। এ রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে একই বছরের ৯ নভেম্বর এ সংশোধনী কেন অবৈধ, বাতিল ও সংবিধান পরিপন্থি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

রুল শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ৫ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে রায় দেন বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী, বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ।

রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি পাওয়ার পর ২০১৭ সালের ৪ জানুয়ারি এ বিষয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।

ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ৩ জুলাই হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে সর্বসম্মতিক্রমে চূড়ান্ত রায়টি দেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ।  

পরবর্তীতে একই বছরের ১ আগস্ট ৭৯৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশিত হয়। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০২ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০২৪
ইএস/এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।