কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানায় দায়ের করা মা ও শিশু হত্যা মামলায় তিন ‘চোর’কে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
বুধবার (২০ নভেম্বর) দুপুর ১টায় কুষ্টিয়া অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক সোহানী পূষণ আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট খন্দকার সিরাজুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- দৌলতপুর উপজেলার জোয়াদ্দার পাড়া গ্রামের বাসিন্দা সেকেন্দার মোল্যার ছেলে মো. হানিফ মোল্যা (৩২), সোনাইকান্দি গ্রামের বাসিন্দা ইমরান হোসেন মণ্ডলের ছেলে আলী আকবর (৩২) ও সোনাইকান্দি গ্রামের মৃত শহিদুল মণ্ডলের ছেলে লালচাঁদ মণ্ডল (৩২)। এরা সবাই পেশাদার চোর চক্রের সদস্য বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৭ নভেম্বর গভীর রাতের কোনো এক সময় দৌলতপুর উপজেলার সোনাইকান্দি গ্রামের মানিক মিয়ার বাড়িতে চুরি করতে ঢোকে একদল চোর। এসময় গৃহবধূ ছানোয়ারা বেগম (৪৮) ঘুম ভেঙে দেখে তাদের ফেলায় চোরেরা তার গলায় মাফলার পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে হত্যা করে। মাকে হত্যার দৃশ্য দেখে ফেলায় শিশু রাজকেও (৮) গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
হত্যার পর ঘরের মধ্যে লাশ ফেলে রেখে বাইরে থেকে দরজা ভিড়িয়ে দিয়ে চোরেরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে উপজেলার শীতলাইপাড়া গ্রামের তৌহিদুল ইসলামের স্ত্রী মোছা. পারভীনা খাতুন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে দৌলতপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিশিকান্ত সরকার সন্দেহভাজন হিসেবে তিন চোরকে আটক করে। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
মামলার তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর দৌলতপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক নিশিকান্ত সরকার তিনজনের বিরুদ্ধে চুরি সংগঠন ও হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগ এনে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি অ্যাড. খন্দকার সিরাজুল ইসলাম জানান, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানার মা ও শিশু হত্যা মামলায় জড়িত আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সাক্ষ্য ও শুনানি শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তিন আসামি হানিফ, আলী আকবর ও লালচাঁদকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। একইসঙ্গে আসামিদের প্রত্যেকের পৃথকভাবে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করেছেন আদালত।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০২৪
আরএ