ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

বাঁশখালীর এমপির জামিন খারিজ, আত্মসমর্পণের নির্দেশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২২ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০১৬
বাঁশখালীর এমপির জামিন খারিজ, আত্মসমর্পণের নির্দেশ

ঢাকা: উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় চট্টগ্রামের বাঁশখালীর সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে ২০ জুনের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

রোববার (১২ জুন) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের বেঞ্চ এ  আদেশ দেন।

আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ একেএম মনিরুজ্জামান কবির।

আসামিপক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদার।

গত ০১ জুন বেলা ১২টার দিকে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে নির্বাচন কমিশনের এক কর্মকর্তাকে পিটিয়ে রক্তাক্ত ও অশ্রাব্য গালিগালাজ করার মতো নজিরবিহীন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে।

ওই দিনই বাংলানিউজকে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘সংসদ সদস্যের পিএস তাজুল ইসলাম আমাকে একটি তালিকা দিয়েছিলেন। সেই তালিকা অনুযায়ী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসার নিয়োগের জন্য এমপি নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান। ওই তালিকা অনুযায়ী আমি প্রিজাইডিং ও পোলিং ‍অফিসার নিয়োগ না দেওয়ায় তারা আমার ওপর অসন্তুষ্ট হন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আমি বাহারছড়া ইউনিয়নে ছিলাম। এমপি সাহেব আমাকে ইউএনওর কার্যালয়ে ডেকে পাঠান। আমি সেখানে গেলে তিনি শুরুতেই উত্তেজিতভাবে আমাকে বলেন, ‘অ্যাই... (ছাপার অযোগ্য গালি) আমি যাদের দায়িত্ব দিতে বলেছিলাম, তাদের তালিকায় রাখিসনি কেন? আমি বললাম, স্যার, আমি নির্বাচনী আইন অনুযায়ী কাজ করেছি। এসময় তিনি বলেন, অ্যাই তোরা কোথায়? ... (ছাপার অযোগ্য গালি) মারতে হবে’।

‘তখন এমপি নিজেই আমাকে … (ছাপার অযোগ্য গালি), মা-বাবা ধরে গালি দিয়ে আমাকে চড়-থাপ্পড় দিতে থাকেন।   আমি বলি, স্যার আপনি আমার গায়ে হাত দিতে পারেন না।   তখন তার সন্ত্রাসীরা এসে আমাকে কিল, ঘুষি, লাথি দিতে শুরু করে।   এ সময় সেখানে বাঁশখালী থানার একজন এসআই ছিলেন।   তিনি কোনো বাধা দেননি।   আমি স্যারকে (আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা) ফোন করার জন্য পকেট থেকে মোবাইল বের করলে পুলিশ কর্মকর্তা সেটি আমার কাছ থেকে কেড়ে নেন। পরে এমপি সাহেব আমাকে বাঁশখালী ছেড়ে না গেলে মেরে ফেলার হুমকি দেন। আমি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে দ্রুত শহরে চলে এসেছি’।

পরদিন ০২ জুন সকাল থেকে বাঁশখালী পৌরসভা সদরে নির্বাচন কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে তাজুল ইসলামের নেতৃত্বে সংসদ সদস্যের অনুসারী নেতাকর্মীরা মিছিল-সমাবেশ করেন।

এ অভিযোগ ওঠার পর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ পাঠালে বাঁশখালীর ১১ ইউপিতে ৪ জুন নির্ধারিত ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়।

পাশাপাশি এমপি মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে মামলা করা সিদ্ধান্ত নেয় ইসি। এরপর ৩ জুন মোস্তাফিজুরসহ কয়েকজনকে আসামি করে মামলা হয়। সংসদ সদস্য মোস্তাফিজ ছাড়া অন্য দুই আসামি হলেন- বাহারছড়া ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী তাজুল ইসলাম ও স্থানীয় ওলামা লীগ নেতা মাওলানা আকতার।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৭ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০১৬
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।