ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

আসামিকে ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে হাজির করায় ডিআইজি প্রিজনকে তলব

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৭
আসামিকে ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে হাজির করায় ডিআইজি প্রিজনকে তলব

ঢাকা: দীর্ঘ কারাবন্দি ১০ আসামির মধ্যে চারজনকে ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে হাজির করায় কারা উপ-মহাপরিদর্শককে (ডিআইজি প্রিজন) ব্যাখ্যা দিতে তলব করেছেন হাইকোর্ট।

আগামী ০৯ মার্চ হাইকোর্টে হাজির হয়ে এ বিষয়ে তাকে ব্যাখ্যা দিতে হবে।
 
বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ১০ জনকে আদালতে হাজির করার পর এ আদেশ দেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

একইসঙ্গে ৯ জনের মামলার নথিও ওইদিন উপস্থাপন করতে হবে। তবে কারাবন্দিদের ০৯ মার্চ হাজির করতে হবে না।

সিলেট ও খুলনা বিভাগে সর্বনিম্ন ১০ বছর ও সর্বোচ্চ ১৮ বছরের বেশি সময় ধরে ১০ বন্দির কারাগারে থাকার বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইডের প্যানেল আইনজীবী সৈয়দা সাবিনা আহমেদ মলি। এরপর গত ০৭ ফেব্রুয়ারি তাদেরকে ২৩ ফেব্রুয়ারি হাজিরের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

বৃহস্পতিবার হাজির করা ১০ জনের মধ্যে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের মুয়াগাঁওয়ের মৃত আলী হোসেনের ছেলে ফরুখ হোসেন ১১ বছর ধরে কারাবন্দি। ২০০৫ সালে কোতোয়ালি থানায় তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়। ওই মামলায় সিলেটের দায়রা জজ বিশেষ আদালতে তাকে ১৩১ বার হাজির করা হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সোনামুড়া গ্রামের আব্দুল গণির ছেলে সেলিম মিয়া ১১ বছর ৬ মাস ধরে কারাবন্দি। ২০০৫ সালে দক্ষিণ সুরমা থানায় তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়। তাকে সিলেটের অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতে ১২২ বার হাজির করা হয়েছে।

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট বেগমখালের মৃত পাণ্ডে জগন্নাথের ছেলে রাজু জগন্নাথ ১৩ বছর ৭ মাস ধরে কারাবন্দি। ২০০৩ সালে রাজুর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়। তাকে এখন পর্যন্ত ১১২ বার বিশেষ দায়রা জজ আদালতে হাজির করা হয়।

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের কাউকান্দি গ্রামের উস্তার গনির ছেলে বশির উদ্দিন (৫৩) ১৩ বছর ধরে হত্যা মামলায় কারাবন্দি। ২০০৩ সালে তাহিরপুর থানায় তার বিরুদ্ধে মামলাটি হয়। তাকে এখন পর্যন্ত ৮১ বার সুনামগঞ্জের দায়রা জজ আদালতে হাজির করা হয়।

জামালপুর জেলার চর চড়সী গ্রামের মুজিবুর রহমানের ছেলে হাবিবুর রহমান ইসমাইল ১১ বছর ধরে কারাগারে বন্দি। তার বিরুদ্ধে ২০০৫ সালে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা হয়।

সাতক্ষীরার ইটাগাছা থানার পশ্চিমপাড়ার মৃত কেরামত আলীর ছেলে মনিরুজ্জামান মুন্না ১১ বছর ধরে কারাবন্দি। ২০০৫ সালে তার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা হয়।

সাতক্ষীরার ইসলামপুরের দলিল উদ্দিনের ছেলে নাসিরুদ্দিন ১১ বছর ধরে সাতক্ষীরা জেলা কারাগারে বন্দি। বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে ২০০৫ সালে মামলা হয় তার বিরুদ্ধে।

সাতক্ষীরার ওমর আলীর ছেলে গিয়াস উদ্দিন বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় ১১ বছর ধরে কারাবন্দি। ২০০৫ সালে তার বিরুদ্ধে মামলাটি হয়। মামলাটি সাতক্ষীরার বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন।

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরের শিবনগরের ফয়েজ উদ্দিন মন্ডলের ছেলে হায়দার আলী (৬২) ১৮ বছর ধরে কারাবন্দি। ১৯৯৮ সালে তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়। এ পর্যন্ত তাকে ৯৯ বার আদালতে হাজির করা হয়েছে।

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার মধ্য সোনাখালীর আব্দুল হাকিম রাজার ছেলে রফিকুল ইসলাম রাজা (৩২) ১৮ বছর ধরে পিরোজপুর জেলা কারাগারে বন্দি। তার বিরুদ্ধে ২০০৬ সালে হত্যা মামলা হয়। এ পর্যন্ত তাকে ৪২ বার আদালতে হাজির করা হয়েছে।

এসব বন্দির বক্তব্য শোনেন হাইকোর্ট।
 
এ সময় চার বন্দিকে ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে আনায় আদালত কেন তাদের ডাণ্ডাবেড়ি পরানো হয়েছে, তা উপস্থিত পুলিশের কাছে জানতে চান। জবাবে পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, কারা কর্তৃপক্ষ চারজনকে ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে দিয়েছেন। এরপর ডিআইজি প্রিজনকে হাজির হয়ে ব্যাখ্যার আদেশ দেন হাইকোর্ট।
 
ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে আনা ওই চার কারাবন্দি হলেন- হাবিবুর রহমান ইসমাইল, মনিরুজ্জামান মুন্না, নাসিরুদ্দিন ও গিয়াস।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৭
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।