ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

হাইকোর্টে আলোচিত তিন হত্যার আপিলের রায় এপ্রিলে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১, ২০১৭
হাইকোর্টে আলোচিত তিন হত্যার আপিলের রায় এপ্রিলে হাইকোর্ট

ঢাকা: আলোচিত তিন হত্যা মামলার আসামিদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদন, ফৌজদারি আপিল ও জেল আপিলের ওপর হাইকোর্টের রায় মিলবে চলতি (এপ্রিল) মাসেই।

বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ তিন হত্যাকাণ্ডের আপিল ও ডেথ রেফারেন্স মামলাগুলোর রায় ঘোষণা করবেন।

হত্যাকাণ্ডগুলো হলো- গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার, মলদ্বারে কমপ্রেশার মেশিনের মাধ্যমে বাতাস ঢুকিয়ে খুলনার শিশু রাকিব হাওলাদার ও পিটিয়ে সিলেটের শিশু সামিউল আলম রাজন হত্যা।

ব্লগার রাজীব
গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী ও ব্লগার রাজীবকে রাজধানীর পল্লবীতে তার বাসার সামনে ২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

ওই ঘটনায় রাজীবের বাবা ডা. নাজিম উদ্দিনের করা মামলায় ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র রেদোয়ানুল আজাদ রানা ও ফয়সাল বিন নাঈম দীপকে মৃত্যুদণ্ড দেন বিচারিক ‍আদালত। রায়ে মাকসুর হাসান অনিককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং এহসান রেজা রুম্মান, নাঈম ইরাদ ও নাফিজ ইমতিয়াজকে দশ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একইসঙ্গে প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।

এছাড়া আনসারুল্লা বাংলা টিমের প্রধান মুফতি জসীমউদ্দিন রাহমানিকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আসামি সাদমান ইয়াছির মাহমুদকে ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও দুই হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত।
 
পরে ডেথ রেফারেন্স অনুমোদনের জন্য হাইকোর্টে আসে। পাশাপাশি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ফয়সালসহ সাতজন আপিল ও জেল আপিল করেন। এসব বিষয়ে শুনানি শেষে ০২ এপ্রিল রায়ের দিন ধার্য করেন আদালত। এদিকে প্রথমদিকে পলাতক থাকার পর পরে গ্রেফতার হয়ে মামলা বাতিলের আবেদন জানান মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রানা। এ আবেদনের ওপরও একইদিন রায় ঘোষণা করা হবে। একইসঙ্গে দেওয়া হবে বিচারিক আদালতের রায়ে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি পাওয়া আসামিদের শাস্তি বৃদ্ধি চেয়ে ব্লগার রাজীবের বাবা ডা. নাজিম উদ্দিনের করা ক্রিমিনাল রিভিশন (শাস্তি পুনর্বিবেচনা) আবেদনেরও।

রাকিব হত্যা
২০১৫ সালের ০৩ আগস্ট বিকেলে খুলনার টুটপাড়ায় শরীফ মোটরস নামে এক মোটরসাইকেলের গ্যারেজে কমপ্রেশার মেশিনের মাধ্যমে বাতাস ঢুকিয়ে রাকিবকে হত্যা করা হয়।

পরদিন রাকিবের বাবার করা মামলায় একই বছরের ৮ নভেম্বর মো. শরীফ ও মিন্টু খানকে মৃত্যুদণ্ড এবং বিউটি বেগমকে খালাস দেন আদালত।

এ রায় ঘোষণার দ্বিতীয় দিনে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের (ডেথ রেফারেন্স) জন্য রায়ের নথিসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হাইকোর্টে আসে। পরে জেল আপিল করেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দু’জন।

মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিল মামলার শুনানি শেষে ০৪ এপ্রিল রায়ের দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট।

রাজন হত্যা
২০১৫ সালে ০৮ জুলাই চুরির অপবাদ দিয়ে সিলেটের কুমারগাঁওয়ে নির্মম নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয় সদর উপজেলার কান্দিরগাঁও ইউনিয়নের বাদেআলী গ্রামের আজিজুল ইসলাম আলমের ছেলে রাজনকে। হত্যাকারীরা নৃশংসতার ২৮ মিনিটের ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিলে দেশে-বিদেশে আলোড়ন সৃষ্টি হয়।

এ ঘটনায় করা মামলার বিচার শেষে ওই বছরের ০৮ নভেম্বর বিচারিক আদালত প্রধান আসামি কামরুল ইসলাম, চৌকিদার ময়না মিয়া ওরফে বড় ময়না, তাজ উদ্দিন বাদল ও পলাতক জাকির হোসেন পাভেলকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ময়না চৌকিদারকে অন্য দু’টি ধারায় পৃথক পৃথকভাবে সাত বছর ও এক বছর করে কারাদণ্ড প্রদান করেন আদালত।

হত্যাকাণ্ডের ভিডিওচিত্র ধারণকারী নূর মিয়াকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। সাত বছরের সাজা হয় কামরুলের দুই ভাই মুহিত আলম ও আলী হায়দার ওরফে আলী এবং পলাতক আসামি শামীম আহমদের। অপর দুই আসামি আয়াজ আলী ও দুলালকে এক বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত।

দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে দশ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে ৩ মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত।

অপরাধ সন্দেহজনকভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় বেকসুর খালাস পান ফিরোজ মিয়া, আজমত আলী ও রুহুল আমিন।

রায়ের দু’দিন পরে এ মামলার ডেথ রেফারেন্স পৌঁছে হাইকোর্টে। পরে আপিল করেন দণ্ডপ্রাপ্ত কয়েকজন।

ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শেষে আগামী ১১ এপ্রিল রায়ের দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।    

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০১৭
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।