ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

‘সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকলে বিচারপতি অপসারণ কিভাবে?’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫১৭ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১৭
‘সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকলে বিচারপতি অপসারণ কিভাবে?’

ঢাকা: সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকলে কিভাবে বিচারপতি অপসারণ করা হবে- এমন প্রশ্ন রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

বৃহস্পতিবার (২৫ মে) ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের আপিল শুনানি অ্যামিকাস কিউরি ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদের মতামত উপস্থাপনের সময় এমন প্রশ্ন তোলেন সর্বোচ্চ আদালত।

বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে দিয়ে করা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ৭ম দিনের মতো এ আপিল শুনানি চলছে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে ৭ বিচারপতির আপিল বেঞ্চে।


 
সকালে রোকনউদ্দিন মাহমুদের মতামত দেওয়ার সময় আদালত বলেন, ‘এখন না হয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে। কিন্তু কোনো সময় যদি না থাকে, যদি হ্যাঙ্গিং পার্লামেন্ট হয়, তাহলে কি হবে? কিভাবে বিচারপতি অপসারণ করা হবে?। তখন তো একটা ভ্যাকুয়াম (শূন্যতা) সৃষ্টি হবে’।

জবাবে রোকনউদ্দিন বলেন, ‘আমার লিখিত সাবমিশনে এটা আছে। আমি নিজেও এ প্রশ্ন রাখছি’।

গত ০৮ মে থেকে বুধবার পর্যন্ত আপিল শুনানির ৬ কার্যদিবসে যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপন করেন আপিল আবেদনের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা এবং রিট আবেদনের পক্ষে মনজিল মোরসেদ। শুরুতে হাইকোর্টের দেওয়া রায় পড়ে শোনান মুরাদ রেজা।

২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী আনা হয়।

সংবিধানের এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরের ০৫ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের নয় আইনজীবী হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। এ রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে একই বছরের ০৯ নভেম্বর এ সংশোধনী কেন অবৈধ, বাতিল ও সংবিধান পরিপন্থী ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

এ রুলের শুনানি শেষে গত বছরের ০৫ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে রায় দেন বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী, বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ।

এর মধ্যে গত বছরের ২৫ এপ্রিল অসদাচারণের জন্য সুপ্রিম কোর্টের কোনো বিচারকের বিরুদ্ধে তদন্ত ও তাকে অপসারণের প্রক্রিয়া নির্ধারণ করে ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বিচারক (তদন্ত) আইন’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা।

গত ০৪ জানুয়ারি এ বিষয়ে আপিল করেন রাষ্ট্রপক্ষ।

১৯৭২ সালে প্রণীত মূল সংবিধানে উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের কাছে ছিল। ১৯৭৫ সালের ২৪ জানুয়ারি সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে এ ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে অর্পণ করা হয়। পরে জিয়াউর রহমানের শাসনামলে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা দেওয়া হয় সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কাছে।

মার্শাল প্রক্লামেশনে করা পঞ্চম সংশোধনীতে এক্ষেত্রে ৯৬ অনুচ্ছেদে পরিবর্তন আনা হয়েছিল। ষোড়শ সংশোধনীতে সেটা বাতিল করে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া হয় সংসদকে।

বাংলাদেশ সময়: ১১১৮ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১৭
ইএস/এএসআর
**
ষোড়শ সংশোধনীর আপিলে মতামত দিচ্ছেন অ্যামিকাস কিউরিরা

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।