ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

‘বরখাস্তের পরও ওষুধ প্রশাসনে কিভাবে চাকরি করছেন?’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৭
‘বরখাস্তের পরও ওষুধ প্রশাসনে কিভাবে চাকরি করছেন?’ সুপ্রিম কোর্ট

ঢাকা: রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে ২৮ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় অদক্ষতা ও অযোগ্যতার কারণে বরখাস্তকৃত ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের এক কর্মকর্তা এখনো কিভাবে চাকরিতে আছেন- তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।

এক সপ্তাহের মধ্যে এর ব্যাখ্যা দিতে মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) ওষুধ প্রশাসনের মহাপরিচালককে আদেশ দেন বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ।  

পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ২৬ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন আদালত।

আবেদনের পক্ষের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ওষুধ প্রশাসনের দুই কর্মকর্তাকে আদালতের জিজ্ঞাসার পর বরখাস্ত করা হয়েছিলো। তাদের একজন সহকারী পরিচালক শফিকুল ইসলাম তথ্য গোপন করে বরখাস্তের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল-১ এ আবেদন জানান। এর প্রেক্ষিতে বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করেন ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে তিনি কাজও শুরু করেছেন।
 
মনজিল মোরসেদ বলেন, বিষয়টি জানার পর আবেদন জানানো হলে মঙ্গলবার হাইকোর্ট তার কাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ট্রাইব্যুনালের আদেশ স্থগিত করেছেন। এছাড়া বরখাস্তের পরও তিনি কিভাবে চাকরি করছেন- এক সপ্তাহের মধ্যে ডিজিকে এর ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

২০০৯ সালে রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে সারাদেশে অনেক শিশু মারা যায়। এ ঘটনায় ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের পক্ষ থেকে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। মামলার বিচার শেষে গত বছরের ২৮ নভেম্বর পাঁচজনকে খালাস দেন বিচারিক আদালত।

ওই রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারিক আদালত বলেছিলেন, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর মামলাটি করার ক্ষেত্রে ১৯৮০ সালের ড্রাগস্‌ আইন যথাযথভাবে অনুসরণ করেনি। মামলায় যথাযথভাবে আলামত জব্দ করা, তা রাসায়নিক পরীক্ষাগারে পাঠানো এবং রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদন আসামিদের দেওয়া হয়নি। এ ক্ষেত্রে ড্রাগস্‌ আইনের ২৩, ২৫ ধারা প্রতিপালন করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে তৎকালীন ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক শফিকুল ইসলাম ও আলতাফ হোসেন চরম অবহেলা, অযোগ্যতা ও অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন।

এদিকে বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে পরে হাইকোর্টে আপিল করেন রাষ্ট্রপক্ষ। ওই আপিল শুনানির জন্য গত ০৯ মার্চ গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট।
মনজিল মোরসেদ বলেন, বিচারিক আদালতের রায়ে ওষুধ প্রশাসনের ওই দুই কর্মকর্তার অদক্ষতা ও অযোগ্যতা এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে অবহেলার বিষয়টি উঠে আসার পর তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে- এক আবেদনের প্রেক্ষিতে তা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট।

এরপর স্বাস্থ্যসচিবের একটি প্রতিবেদন দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয়- ওই দুই কর্মকর্তাকে সতর্ক করা হয়েছে। অথচ আদালত জানতে চেয়েছিলেন- কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ব্যবস্থা না নেওয়ার ব্যাখ্যা দিতে স্বাস্থ্যসচিবকে ২৩ আগস্ট তলব করেন হাইকোর্ট।
পরে ২৪ আগস্ট সচিব হাইকোর্টকে জানান, দুই কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৭
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।