ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

ফাঁসির রায়ের পর কান্নায় ভেঙে পড়েন পল্টনের খুনিরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৯
ফাঁসির রায়ের পর কান্নায় ভেঙে পড়েন পল্টনের খুনিরা

ঢাকা: ময়মনসিংহের নান্দাইলে ওষুধের দোকানি মাজহারুল ইসলাম পল্টন হত্যা মামলায় দশজনের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর আসামি ও স্বজনরা আদালত প্রাঙ্গণে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

এ মামলার রায়কে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই ১৭ আসামির অন্তত শতাধিক স্বজন আদালত প্রাঙ্গণে ভিড় করেন। দুপুর পৌনে ১টা থেকে রায় ঘোষণা শুরু হয়।

রায় ঘোষণা করেন এক নম্বর দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান। দুপুর ১টার পরপর রায়  ঘোষণা শেষে আসামিদের বের করে আনতে থাকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এজলাস থেকে বের করার সময়ই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের কেউ কেউ কাঁদতে থাকেন।

ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত ভবনের তিনতলা থেকে নিচে নামিয়ে প্রিজনভ্যানে তোলার সময় আসামি ও স্বজনদের কান্নার রোল পড়ে যায়। এরপর আসামিদের প্রিজনভ্যানে করে নিয়ে যাওয়ার পর স্বজনদের কেউ কেউ আদালত প্রাঙ্গণে হাউমাউ করে কাঁদেন ও গড়াগড়ি করতে থাকেন।

এদিকে রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ঢাকার এক নম্বর দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালের বিশেষ কৌশলী আবু আব্দুল্লাহ ভূঞা। তিনি জানান, আসামিদের বেশিরভাগ সর্বোচ্চ শাস্তি পেয়েছেন তাই আমরা সন্তুষ্ট। তবে খালাস পাওয়া আসামিদের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে কি-না, সে বিষয়ে বাদীপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

অপরদিকে দণ্ডিত আসামিদের অন্যতম আইনজীবী মো. মুহিব্বুর রহমান মাহবুব জানান, মামলার বিচারিক কার্যক্রমে এসেছে যৌনকর্মের পারিশ্রমিক নিয়ে দ্বন্দ্বে খুন হয় মাজহারুল ইসলাম পল্টন। অথচ দণ্ডপ্রাপ্ত তিনজন আবুল কাশেম ফকির ওরফে বাচ্চু মেম্বার, আবুল কালাম ওরফে পিনু ডাক্তার ও চন্দন সহোদর ভাই। তিন ভাই একইসঙ্গে একজন নারীর সঙ্গে যৌনকর্মে লিপ্ত হবে এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। দণ্ডপ্রাপ্ত এ আসামিরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবো।

এদিকে যৌনকর্মের বিষয়ে ইঙ্গিত এসেছে আদালতের রায়েও। রায়ের সারমর্মে বলা হয়, সার্বিক পর্যালোচনায় দেখা যায়, পারিপার্শ্বিক সাক্ষীরা এবং আসামি ফারুক ও রুমার দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির সাক্ষ্যে আসামি মৃত জব্বার মহুরি, এখলাছ উদ্দিন ওরফে জুয়েলসহ অন্যান্য আসামিরা পতিতা রুমাকে নিয়ে ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল থানার শিয়ালধরা বাজারে মাহজারুল ইসলাম পল্টনের দোকানে রাতের বেলায় যায় এবং পর্যায়ক্রমে পল্টনের হাত-পা বাঁধা, বাঁশের খুটিতে গলা বাঁধায় তার মাথা, কপালের মধ্যে এবং কপালে বাম চোখের ভ্রুতে লাঠি আঘাত রয়েছে। যাতে করে খুনের বিষয়টি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের দণ্ড অনুমোদনের (ডেথ রেফারেন্স) জন্য মামলার নথি হাইকোর্টে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

বালাদেশ সময়: ১৫২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৯
‌কেআই/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।