ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

বেগমগঞ্জের সেই মামলায় হাইকোর্টে জামিন চেয়েছেন সোহাগ মেম্বার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২০
বেগমগঞ্জের সেই মামলায় হাইকোর্টে জামিন চেয়েছেন সোহাগ মেম্বার হাইকোর্ট

ঢাকা: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নে গৃহবধূকে নির্যাতন ও ধর্ষণ মামলায় প্রধান আসামি স্থানীয় মেম্বার মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগ প্রকাশ সোহাগ মেম্বার (৪৫)।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোম্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ জামিন আবেদন করা হয়।

  এ মামলায় পিবিআইয়ের দাখিল করা চার্জশিট চেয়ে বৃহম্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) হাইকোর্ট জামিন আবেদনের শুনানি মুলতবি করেন। আদালতে আসমিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী অজি উল্লাহ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন।

গত ১৫ নভেম্বর ওই ঘটনায় প্রধান আসামি দেলোয়ার হোসেন প্রকাশ দেলুসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। একইসঙ্গে চার্জশিটে মামলা দুটি থেকে গ্রেফতারকৃত আসামি রহমত উল্যাহ ও মাইন উদ্দিন শাহেদকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। অভিযুক্ত ১৪ জনের মধ্যে চারজন এখনো পলাতক রয়েছে।

মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে নোয়াখালী পিবিআই কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পিবিআই চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল।  এ মামলার আসামিরা হলেন-দেলোয়ার হোসেন দেলু (২৬), জামাল উদ্দিন প্রকাশ প্রবাসী জামাল (৫২), নূর হোসেন বাদল (২২), আব্দুর রহিম (২০), মোহম্মদ আলী প্রকাশ আবুল কালাম (২৩), সামছুদ্দিন সুমন প্রকাশ কন্ট্রাক্টর সুমন (৩২), ইস্রাফিল হোসেন মিয়া (২১), মাইন উদ্দিন সাজু (২১), নূর হোসেন রাসেল (২৯), আনোয়ার হোসেন সোহাগ (২৪), আব্দুর রব চৌধুরী প্রকাশ লম্বা চৌধুরী (৫০), মোস্তাফিজুর রহমান প্রকাশ আরিফ (১৯), মিজানুর রহমান প্রকাশ তারেক (২০), মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগ প্রকাশ সোহাগ মেম্বার (৪৫)।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চাঞ্চল্যকর গৃহবধূ নির্যাতন ও ধর্ষণ মামলা দুটি তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর পিবিআই চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল ও নোয়াখালী কার্যালয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মুন্সী তদারকি করেন।  

পরে ধর্ষণ মামলাটি পুলিশ পরিদর্শক মো. সিরাজুল মোস্তফা ও নির্যাতন মামলাটি পুলিশ পরিদর্শক মামুনুর রশিদ পাটোয়ারীকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ধর্ষণ মামলার দুই আসামি ও নির্যাতন মামলায় ওই দুই জনসহ ১০ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে আট আসামি। এখনো পর্যন্ত পলাতক রয়েছে জামাল উদ্দিন, আব্দুর রব চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান আরিফ ও মিজানুর রহমান তারেক নামে চার আসামি।

পিবিআই চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল জানান, মঙ্গলবার দুপুরে ধর্ষণ ও নির্যাতন মামলায় ১৪ জন আসামির বিরুদ্ধে নোয়াখালী চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক উৎপল চৌধুরীর কাছে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে। পলাতক চার আসামিকে দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।


জানা যায়, গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে ওই নারীর সঙ্গে তার আগের স্বামী দেখা করতে তার বাবার বাড়ি একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে আসেন। বিষয়টি দেখে ফেলে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী ও দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার। রাত ১০টার দিকে দেলোয়ারের লোকজন ওই নারীর ঘরে ঢুকে পর পুরুষের সঙ্গে অনৈতিক কাজ ও তাদের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাকে মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে পিটিয়ে ওই নারীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করা হয়।

৪ অক্টোবর দুপুরে ওই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জেলায় তথা দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়। পরে এ ঘটনায় দায়েরকৃত নির্যাতন, ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি মামলা অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২০
ইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।