ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

নিজস্ব জনবলের হিসাব বিবরণী প্রকাশে দুদকের গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০২১
নিজস্ব জনবলের হিসাব বিবরণী প্রকাশে দুদকের গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে

ঢাকা: দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনাররাসহ সব জনশক্তি যদি তাদের হিসাব বিবরণী প্রকাশ করেন, তাহলে মানুষের কাছে কমিশনের গ্রহণযোগ্যতা আরও বেশি বেশি বাড়বে বলে মনে করছেন হাইকোর্ট।

কমিশনের তদন্ত কর্মকর্তার ভুলে নিরাপরাধ এক ব্যক্তির দণ্ড নিয়ে করা রিট মামলার শুনানিতে বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) এমন মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।



আদালতে রিট আবেদনকারী যুবকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মিনহাজুল হক চৌধুরী এবং দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

১৯৯৮ সালের এসএসসির সনদ জালিয়াতি করে এইচএসসিতে ভর্তি হয়েছে এক যুবক এমন অভিযোগ এনে ২০০৩ সালের মামলা করে তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরো।

১০ বছর পরে অভিযোগপত্র দাখিল এবং ২০১৪ সালে মামলার বিচার শেষে আসামিকে পলাতক দেখিয়ে তিনটি ধারায় পাঁচ বছর করে ১৫ বছরের সাজা দেন নোয়াখালীর বিশেষ জজ আদালত। পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা করে ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন।

এ দণ্ডে গ্রেফতারে পুলিশি তৎপরতা দেখে নিরাপরাধ যুবক মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম হাইকোর্টে রিট করেন। রিটে তিনি উল্লেখ করেন তার জন্ম ১৯৯০ সালে। এমনিক তিনি সংশ্লিষ্ট কলেজে কোনো দিন ভর্তি হননি। এরপর হাইকোর্ট রুল জারি করেন। রুলের জবাবে দুদক বলছে, সরল বিশ্বাসের ভুল (বোনাফাইড মিসটেক)।

রুলের শুনানিতে খুরশীদ আলম খান বলেন, এই তদন্ত কর্মকর্তার জীবনের এটা প্রথম চার্জশিট।

তখন আদালত বলেন, প্রথমটাই তো তার ভালো মতো করা উচিত ছিলো।  

আদালত বলেন, ২/১ একটা ভুলের কারণে আপনার গোটা প্রতিষ্ঠান (দুদক) প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। কিছু কিছু লোক আছে, জায়গা আছে যেখানে মানুষের প্রত্যাশা হলো তারা ফেরেশতার মতো থাকতে হবে।  
একপর্যায়ে দুদকের আইনজীবী বলেন, আমরা চাই আবার ট্রায়াল (বিচার) হোক। সত্যিকার মানুষ (আসামি) আসুক। উই আর এক্সট্রিমলি, এক্সট্রিমলি সরি। এটার পুরো কমিশন দুঃখিত, লজ্জিত। আমরা দুদক আইনের ৩১ (সরল বিশ্বাসের ভুল) এর কথা বলে সব মামলায় পার পেতে চাচ্ছি না।

আদালত বলেন, কমিশন অনেক ভালো কাজ করছে। কিন্তু ২/১টা ঘটনায় এমন একটা নেতিবাচক সংবাদ সারা দেশে তৈরি হয়, তখন একটা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

খুরশীদ আলম খান বলেন, আমরা জাহলমের মামলা কনটেস্ট করেছি। কিন্তু এখানে কনটেস্ট করছি না। মেনে নিয়েছি।  

একপর্যায়ে আদালত বলেন, যদি কমিশনের কমিশনাররাসহ সব জনশক্তি যদি তাদের হিসাব বিবরণী প্রকাশ করে, তাহলে মানুষের কাছে কমিশনের গ্রহণযোগ্যতা আরও বেশি বেশি বাড়বে।  
খুরশীদ আলম বলেন, আদালতের এ বার্তা পাঠিয়ে দেবো।  

এরপর আদালত রায় দেন। রায়ে দুদকের ভুল তদন্তের ওপর নিরাপরাধ যুবককে তিনটি ধারায় দেওয়া ১৫ বছরের কারাদণ্ডের রায় বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে নতুন করে ওই মামলা তদন্ত করতে বলেছেন উচ্চ আদালত। এছাড়া সাজা পরোয়ানা প্রত্যাহার করা হয়েছে।  

আরও পড়ুন>> দুদকের ভুলের সেই রায় বাতিল, দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নির্দেশ

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০২১
ইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।