ঢাকা: মোহাম্মদ শহিদ ইসলাম পাপুলকে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের এমপি (সংসদ সদস্য) পদ থেকে বহিষ্কার করে তার সংসদীয় আসন কেন শূন্য ঘোষণা করা হবে না, তা নিয়ে জারি করা রুলের শুনানির জন্য ২২ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।
রুল শুনানির দিন ধার্য চেয়ে রিটকারী পক্ষের আবেদনে সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ দিন ঠিক করেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শেখ আওসাফুর রহমান বুলু। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. সালাহ উদ্দিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর।
আদালতে রিটটি দায়ের করেন ওই আসনে একাদশ সংসদ নির্বাচনের স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী আবুল ফয়েজ ভূঁইয়া।
ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ১৮ আগস্ট রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
রিটের পর আইনজীবী সালাহ উদ্দিন বলেছিলেন, শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে নির্বাচনী হলফনামায় তিনি মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। তিনি হলফনামায় স্নাতকোত্তর উল্লেখ করে জমা দিয়েছেন স্নাতক সনদ। এ মিথ্যা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর ১২(সি) এর লঙ্ঘন। তাই আবুল ফয়েজ ভূঁইয়া রিট করেছেন।
চার সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচন কমিশন, নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিব, লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক, শহিদ ইসলাম পাপুলসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রিট আবেদনে দৈনিক সমকালের একটি প্রতিবেদন যুক্ত করা হয়।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সংশ্নিষ্ট সূত্র জানায়, পাপুল প্রতারণা, জালিয়াতি করে শুধু অবৈধ সম্পদই অর্জন করেননি। তিনি জালিয়াতি করে ভুয়া শিক্ষাগত সনদও জোগাড় করেছেন। তিনি সিয়েরা লিয়নের মিলটন মরগাই কলেজ অব এডুকেশন অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে ব্যাচেলর অব সোশ্যাল সায়েন্স ইন ইকোনমিক্স বিষয়ে স্নাতক সনদ সংগ্রহ করেছেন। শিক্ষাবর্ষ ১৯৮৭। ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, পাপুল যে বিষয়ের ওপর স্নাতক সনদ জোগাড় করেছেন, কলেজটিতে ওই বিষয়ের ওপর কোনো ডিপার্টমেন্টই নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাপুল ২০১৬ সালে কুয়েত থেকে নিজ এলাকা লক্ষ্মীপুর ফিরে ‘লক্ষ্মীপুর২৪ডটকমে’ একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। এটি প্রকাশ করা হয় একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর। সেখানে তিনি বলেছেন, ঢাকার তিতুমীর কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছেন ১৯৯২ সালে। সিয়েরা লিয়নের মিলটন মরগাই কলেজের নামে স্নাতক সনদ সংগ্রহ করেছেন ১৯৮৭ সালে। ১৯৯২ সালে উচ্চ মাধ্যমিক ও এর আগে ১৯৮৭ সালে স্নাতক পাসের তথ্যের এ অসামঞ্জস্যপূর্ণ হিসেব তাকে বিতর্কিত করেছে। নিউইয়র্ক সিটি কলেজে অর্থনীতিতে পড়াশোনা করেছেন বলে ওই সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেছেন।
চলতি বছরের ৬ জুন স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৯টায় কুয়েতের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্যরা মুশরেফ আবাসিক এলাকা থেকে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের এমপি শহিদ ইসলাম পাপুলকে গ্রেফতার করে। কুয়েত সিআইডি তার বিরুদ্ধে কুয়েতে মানবপাচার ও অর্থপাচারের অভিযোগ আনে। মানবপাচার ও অর্থপাচারের অপরাধে গত বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) পাপুলকে কারাদণ্ড দিয়েছেন কুয়েতের একটি আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১৯ লাখ কুয়েতি রিয়াল (৫৩ কোটি ১৯ লাখ ৬২ হাজার টাকা) জরিমানা করা হয়েছে।
* আরও পড়ুন:
এমপি পাপুলের আসন শূন্য ঘোষণা নিয়ে রুল
কুয়েতে এমপি পাপুলের ৪ বছরের কারাদণ্ড
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২১
ইএস/এসআই
