ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ফরিদপুরে গবাদী পশু পালনে ভাগ্যের পরিবর্তন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩, ২০২৩
ফরিদপুরে গবাদী পশু পালনে ভাগ্যের পরিবর্তন

ফরিদপুর: ঋণ নিয়ে উন্নত জাতের গাভী ও দুধ উৎপাদনের মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি দারিদ্য হ্রাস ও গ্রামীণ কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্য নিয়ে ফরিদপুর সদর উপজেলার ৩২৫ জন সমবায়ী নিজেদের স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তুলছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফরিদপুর সদর উপজেলা সমবায় সমিতির ‘উন্নত জাতের গাভী পালনের মাধ্যমে সুবিধা বঞ্চিত নারীদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় ২০১৬ সালে কৈজুরী ও গেরদা নারী উন্নয়ন সমবায় সমিতির ১০০ জন করে দুই সমিতির মোট ২০০ জন নারী সমবায়ী উন্নত জাতের গাভী পালনের লক্ষ্য নিয়ে প্রত্যেকে ১ লাখ টাকা করে ঋণ নেন।

অপরদিকে দুগ্ধ সমবায় সমিতির কার্যক্রম বাড়ানোর মাধ্যমে ‘বৃহত্তর ফরিদপুর, বরিশাল, খুলনা জেলা দারিদ্র হ্রাসকরণ ও আর্থ সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায়’ উপজেলার নর্থ চ্যানেল প্রাথমিক দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতির ১২৫ জন নারী ও পুরুষ সদস্য দুধ উৎপাদনের লক্ষ্যে একই পরিমাণ ঋণ নেন। এই দুই প্রকল্পের আওতাধীন ৩২৫ জন সমবায়ী সদস্য ঋণ প্রকল্পের স্ব স্ব নিয়মানুযায়ী উন্নত জাতের গাভী ও দুধ উৎপাদনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় খামার তৈরি করে গবাদী পশু (গরু) পালন শুরু করেন।

অনেক সমবায়ী সদস্য দুটি গরু নিয়ে খামার শুরু করলেও বর্তমানে তাদের খামারে ৮/১০ গরুও লক্ষ্য করা গেছে। একই সঙ্গে দুগ্ধ প্রকল্পের অনেক সমবায়ী দুধ উৎপাদনের মধ্য দিয়ে বাজারজাত করে নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন করছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এ প্রকল্পের সদস্যরা স্বল্প পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করলেও বর্তমানে অধিকাংশ খামারি উন্নত জাতের গাভী ও দুধ উৎপাদনে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন।

এসব খামারি জানান, ২০১৬ সালে নাম মাত্র সুদে ফরিদপুর সদর উপজেলা সমবায় সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে আমরা গবাদী পশু পালন শুরু করি। তবে এ প্রকল্পের ঋণের কিস্তি প্রথম বছরে পরিশোধ করতে হয়নি, তাই আমরা উত্তোলনকৃত ঋণের অর্থ দিয়ে প্রথম বছরেই ভালোভাবে খামার প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি। পাশাপাশি পরবর্তী বছরের আয় থেকে ২ বছরে মোট ২০ কিস্তির মাধ্যমে আমরা উত্তোলন করা ঋণের টাকা পরিশোধ করছি। দ্রব্যমূল্যের স্থিতিশীলতার পাশাপাশি সমবায় সমিতির মাধ্যমে নারী উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবেন বলেও মনে করেন তারা।

সেই সঙ্গে গবাদী পশুপালন করে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি দারিদ্য হ্রাসকরণ ও গ্রামীণকর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলেও তারা প্রত্যাশা করেন। তবে গোখাদ্যের দাম বাড়াসহ খামার পরিচর্যা অনেক ব্যয়বহুল হওয়ায় এসব ঋণের পরিমাণ আরেকটু বেশি হলে আরও বেশি উপকৃত হওয়ার দাবি করে এই ঋণেও তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হচ্ছে বলে জানান তারা।

এ বিষয়ে ফরিদপুর সদর উপজেলা সমবায় অফিসার মুহম্মদ আমানুর রহমান জানান, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত ও মানুষের দারিদ্র্য দূর করে ব্যপক উৎপাদন কর্মযজ্ঞ এবং সদস্যদের অর্থনৈতিকঅবস্থার উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে আসছে সমবায় সমিতি। এরই ধারাবাহিকতায় সরকারের এ প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামের অতিদরিদ্র মানুষেরা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তনের পাশাপাশি দেশের আর্থিক জিডিপির হার বাড়াতেও বিশেষ অবদান রাখতে পারবে।

সমবায় সমিতি একটি জনকল্যাণ ও উন্নয়নমূলক আর্থসামাজিক প্রতিষ্ঠানের কথা উল্লেখ করে আমানুর রহমান জানান, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তোলার পাশাপাশি সমাজে পিছিয়ে পড়া হতদরিদ্রদের জীবনমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই ধারাবাহিকতায় এসব পিছিয়ে পড়া জনগণের জীবনমান উন্নয়নে নাম মাত্র সুদে সহজশর্তে ঋণ দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩, ২০২৩
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।