চাঁদপুর: সেতুর মাঝখানে বিশাল এক গর্ত হয়ে আছে ছয় মাসের বেশি সময় ধরে। যে কারণে সেতুটি এই দীর্ঘসময় অকার্যকর অবস্থায় রয়েছে।
চাঁদপুরের বালিথুবা পূর্ব ইউনিয়নের প্রধান সড়কে ‘চাঁদপুর সেচ প্রকল্প’ খালের উপর নির্মিত সেতুটির এমন করুণ দশা। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন উপজেলার পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ। কারণ সড়কটি স্থানীয়দের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এদিকে উপায় না পেয়ে কয়েক কিলোমিটার দূরে চান্দ্রা বাজার সড়ক দিয়ে এখন যানবাহন আসা-যাওয়া করছে। স্থানীয়রা এই সেতু মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরখাল হতে পাটওয়ারী বাজার সড়ক ও সেতুটি ২০০২-২০০৩ অর্থ বছরে নির্মাণ হয়। সেতু নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। ২০০২ সালের ৫ জুন সেতু নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন তৎকালীন সংসদ সদস্য আলমগীর হায়দার খান। এরপর এই সড়কটি সংস্কার হলেও সেতুটি কোনো ধরনের মেরামত হয়নি।
সরেজমিন ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, সেতুর উত্তর পাশে গত ৬ মাস পূর্বে বড় গর্ত সৃষ্টি হয়ে ভেঙে পড়ে। এরপর থেকে এর উপর দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। অনেক চালক সেতু ভাঙা না জেনে এখানে এসে বিপাকে পড়ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী আরমান বলেন, সেতুতে প্রথমে পানি জমে থাকত। এরপর একটি ছোট ছিদ্র হয়। এরপর ধীরে ধীরে বড় আকারে গর্ত হয়ে নীচে ভেঙে পড়ে। এখন অনেক যানবাহন দুই পাশে এসে দাঁড়িয়ে থাকে। উপায় না পেয়ে ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার ঘুরে আবার প্রধান সড়কে আসতে হয়। এটি খুব দ্রুত সময় সংস্কার করা দরকার।
একাধিক সিএনজিচালক জানান, সেতুর মাঝখানে যখন ছোট গর্ত ছিল তখনই স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরকে জানিয়েছিলাম আমরা। তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তখন মেরামত কররে এতো বড় গর্তের সৃষ্টি হতো না। এখন তো ভয়ঙ্কর অবস্থা সেতুর। আমাদের এই অঞ্চলের মানুষেরা বচাইতে বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছি।
চাঁদপুর জেলা সদর থেকে আসা অটোরিকশাচালক জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমি না জেনেই পাটওয়ারী বাজার থেকে এই সড়ক দিয়ে আসি। এসে দেখি সেতুতে বিশাল এক গর্ত। উপায় না পেয়ে এখন অন্য সড়ক দিয়ে ঘুরে জেলা সদরে যেতে হচ্ছে। সেতুর এমন করুণ দশা আমার মতো অনেক চালকই জানেন না।
বালিথুবা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. হারুনুর রশিদ বাংলানিউজকে বলেন, সেতুর মাঝখানে গর্ত হওয়ার পর আমি উপজেলা প্রকৌশলীকে জানিয়েছি। এরপর গত উপজেলা উন্নয়ন সভায়ও চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়। এই সেতু খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দ্রুত মেরামত করার জন্য বারবার অনুরোধ করা হচ্ছে। এটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের কাজ। আমাদের ইউনিয়নের কোনো বরাদ্দ দিয়ে মেরামত ব্যয় বহন করা সম্ভব নয়।
এই বিষয়ে বক্তব্যের জন্য ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. আবরারকে বেশ কয়েকবার ফোন করা হয়। তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাসলিমুন নেছা বাংলানিউজকে বলেন, সেতুটি ভাঙার বিষয়ে আমাদের সভায় আলোচনা হয়েছে। পূর্বের অর্থ বছরের বেশ কয়েকটি উন্নয়ন কাজ হয়নি। কেন হয়নি এসব বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। আর সেতুর বিষয়ে সভার পরে আলাদা করে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রকৌশলীর আলোচনা করেছেন। এটি মেরামতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০২৩
এসএএইচ