ঢাকা: আয়কর কর্মকর্তার ক্ষমতা কমিয়ে ‘আয়কর আইন, ২০২৩’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সোমবার (২৩ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, নতুন আইনের ফলে কর কর্মকর্তা নিজের ইচ্ছামাফিক আয়কর নির্ধারণ করতে পারবেন। আইনে নির্ধারণ করে দেওয়া ফর্মুলা অনুযায়ী আয়কর নির্ধারণ হবে।
তিনি বলেন, আমাদের বর্তমান যে ইনকাম ট্যাক্স আইন, এর মূল আইনটি ছিল ১৯২২ সালের। পরবর্তীতে ১৯৮৪ সালে একটা অধ্যাদেশ করা হয়, সেটা দিয়েই আমরা পরিচালিত হয়ে আসছি।
মাহবুব হোসেন আরও বলেন, আমাদের বিদ্যমান যে আইনটি ইংরেজিতে আছে ওটাকে বাংলায় করা হয়েছে। এটা সহজবোধ্য করা হয়েছে। ভাষা কিছু কিছু ক্ষেত্রে সংযোগ-বিয়োজন করা হয়েছে। বিশেষ করে যেখানে জটিলতা বেশি ও অস্পষ্টতা ছিল, সেগুলো বাতিল করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের ট্যাক্স কর্মকর্তাদের যে অবাধ ‘ডিসক্রিয়েশনি পাওয়ার’ ছিল, তা সীমিত করা হয়েছে। রিটার্ন দাখিলের ক্ষেত্রে যে সমস্ত কাগজপত্র দরকার হবে, বিশেষ করে ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে সেগুলো সহজতর করা হয়েছে।
‘ডিসক্রিয়েশনি পাওয়ার’ বিষয়ে অন্তত ২০টি ক্ষেত্রে উল্লেখ আছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আগে অফিসারের নিজের ক্ষমতাবলে তিনি যেটা যৌক্তিক মনে করবেন সেভাবে হবে। এখন সেটার গাণিতিক ফর্মুলা দেওয়া হয়েছে। ওই ফর্মুলায় যে রেজাল্ট আসবে, সেটাই হবে তার জন্য নির্ধারিত ট্যাক্স। অফিসার নিজে ইচ্ছা করলেই বাড়াতে বা কমাতে পারবেন না।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, আমার ওপর কত ট্র্যাক্স ধার্য হবে, আগে আয়কর কর্মকর্তা এটা কিছুটা ডিসাইড করতেন। আয়কর কর্মকর্তার যেটা যৌক্তিক বলে মনে হতো, সেটা তিনি করতে পারতেন। এতে আপিলের সংখ্যা বেড়ে যেতো। এখন যেটা করা হয়েছে ওই কর্মকর্তার সাবজেক্টিভ জাজমেন্টের ওপর নয় বরং একটা ফর্মুলা করা হয়েছে, সেখানে অবজেক্টিভ ইনফরমেশনগুলো দেবেন, ফর্মুলা আপানাকে ক্যালকুলেট করে দেবে। এতে হয়রানির সুযোগ কমে যাবে।
তিনি বলেন, এই আইনের মাধ্যমে অনলাইনে আয়কর দেওয়া আরও সহজ করা হবে। অনলাইনে আমরা এখন যেভাবে দেই, যেভাবে প্রশ্নগুলো আসে, সেগুলো অনেক সহজ করা হবে।
মাহবুব হোসেন জানান, আমরা ইনকাম ট্যাক্স পদ্ধতিতে এখন যে আইসিটি নির্ভর হতে যাচ্ছি, সেটাকে প্রাতিষ্ঠানিক করার চেষ্টা হয়েছে। এটি খুব বড় একটা আইন। ৩৪৮টি ধারা রয়েছে। খসড়া উপস্থাপনের আগে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের মতামত নিয়েছে।
তিনি বলেন, বিদ্যমান আইনে কেবলমাত্র উৎসে কর কর্তন সংক্রান্ত ২৯টি রিটার্ন ও বিবরণী দাখিলের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেটি প্রস্তাবিত আইনে ১২টি করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আমাদের পুরো কাজটাকে যাতে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে তুলনা করা যায়, সেদিকে নজর দেওয়া হয়েছে বলে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ জানিয়েছে। ট্যাক্সের বেজ যাতে সম্প্রসারণ হয়, সেই সুযোগ তৈরি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০২৩
এমআইএইচ/এমজেএফ