রংপুর: রংপুরে গঙ্গাচড়া উপজেলার মর্ণেয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন ১০ ইউপি সদস্য। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইউএনও নাহিদ তামান্না।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) বিকেলে মর্ণেয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে ১০ জন ইউপি সদস্য স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়।
অভিযোগে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সরকারি জমি দখল, প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ, সরকারি গাছ কেটে বিক্রিসহ ২০টি অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন ইউপি সদস্যরা।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান সদস্যদের না জানিয়ে নিজের খেয়াল-খুশি মতো ইউনিয়ন পরিষদ চালাচ্ছেন। সেই সঙ্গে সরকারি প্রকল্পের অর্থ নয়ছয় করে নিজের পকেট ভারি করছেন।
তিনি কোনো সভা না করেই টিসিবির কার্ড, ভিজিএফের কার্ড বিতরণ, ৪০ দিনের কর্মসূচিতে নিজের পছন্দের ইউপি সদস্যদের কাজ দেওয়া, টাকার বিনিময়ে রেশন কার্ড বিক্রি করেছেন। এছাড়া হতদরিদ্র ও বন্যায় দুর্গতদের শুকনো খাবার ও ২ টন চাল, এডিপি বরাদ্দ, দুইটি নন-ওয়েজ প্রকল্পের অর্থ, এলজিএসপির তিনটি প্রকল্পের ৯ লাখ টাকা, কাবিখা, কাবিটা প্রকল্পের টাকা, সরকারি প্রকল্পের টাকা, ইউনিয়ন পরিষদের পুরস্কারের টাকাসহ চৌকিদারের ট্যাক্সের টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে ইউপি সদস্যরা বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের উন্নয়ন খাত ট্রেড লাইসেন্স, ভূমিহীন সনদ, ওয়ারিশ সনদ, জন্ম নিবন্ধন ও মৃত্য সনদপত্রের টাকা নিজ কর্মী দিয়ে উত্তোলণ করে আত্মসাত, সরকারি জমিতে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে বিক্রি, ইউনিয়ন পরিষদের রাস্তার ৩০১টি সরকারি গাছ কেটে বিক্রি, সরকারি জমি দখল করে ১০ একর জমি লিজ দিয়ে টাকা উত্তোলনসহ ইউপি সদস্যদের ভয়-ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ তোলা হয়েছে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। এছাড়া ৫০ হাজার টাকা মূল্যের টিআর বরাদ্দের জন্য ইউপি সদস্য প্রতি ১০ হাজার টাকা ও চৌকিদার নিয়োগে ৬ লাখ টাকা তিনি ঘুষ নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
মর্ণেয়া ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. তৌহিজার রহমান বলেন, চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদ চালাচ্ছেন। ইউপি সদস্যরা এর প্রতিবাদ করলে তাদের নানা হুমকি ও ভয়-ভীতি দেখানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে মর্ণেয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদ তামান্না বলেন, মর্ণেয়া ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২৩
এফআর